সিনাইয়ে গুলিতে ২৪ মিসরীয় পুলিশ নিহত

0
227
Print Friendly, PDF & Email

সিনাই উপত্যকায় আজ সোমবার মিসরের অন্তত ২৪ জন পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা। দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গাজা সীমান্তে রাফা শহরের কাছে সিনাই উপত্যকায় পুলিশের ওই সদস্যরা দুটি বাসে করে টহল দিচ্ছিলেন। এ সময় চারজন সশস্ত্র ব্যক্তি বাস দুটি থামায়। বাস থেকে পুলিশ সদস্যদের নামিয়ে তারা গুলি করে। এতে অন্তত ২৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হন। এ ছাড়া বিস্ফোরণে বেশ কিছুসংখ্যক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

২০১১ সালে মিসরের সাবেক স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের পতনের পর সিনাই এলাকায় হামলার ঘটনা বেড়েছে। সম্প্রতি মিসরের সেনাবাহিনী সিনাইয়ে অভিযান জোরদার করে।

মিসরের রাজধানী কায়রোর কাছে একটি কারাগারে গতকাল রোববার মুসলিম ব্রাদারহুডের অন্তত ৩৬ জন কারাবন্দী নিহত হয়েছে। এ ঘটনাকে ঠান্ডা মাথার হত্যাকাণ্ড বলে অভিহিত করেছে মুসলিম ব্রাদারহুড।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সরকারের পক্ষ থেকে প্রাণহানির বিষয়ে একেক রকম সংখ্যা উল্লেখ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ঘটনার বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রথমে দাবি করে, বন্দীরা একজন কর্মকর্তাকে জিম্মি করে। পরে তাদের বহনকারী গাড়িটিতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা গুলি চালালে হতাহতের ঘটনা ঘটে। আবার দাবি করা হয়েছে, কারাগার থেকে স্থানান্তরের সময় পালানোর চেষ্টা রোধে পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসে দম বন্ধ হয়ে বন্দীরা মারা গেছে। মুসলিম ব্রাদারহুড এ ঘটনাকে ঠান্ডা মাথার ঘটানো হত্যাকাণ্ড বলে অভিহিত করেছে।

দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকদের উদ্দেশে সেনাপ্রধান জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি গতকাল বলেন, মিসরে সবার জন্য সুযোগ রয়েছে। মুরসির সমর্থকদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, সহিংসতার মুখে সেনাবাহিনী নীরব থাকবে না।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) হুমকি দিয়েছে, মিসরে সহিংসতা না থামলে দেশটির সেনাবাহিনী ও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ইইউর সম্পর্ক জরুরি ভিত্তিতে পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। গত চার দিনে মিসরে সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে সাত শর বেশি।

সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে আলোচনা করতে অন্তর্বর্তী সরকার গতকাল বৈঠকে বসে। এতে নানা বিষয়ের পাশাপাশি ব্রাদারহুডকে আইনগতভাবে বিলুপ্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী হাজেম বেবলাউয়ির শনিবারের প্রস্তাবটি আলোচিত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়েছে।

মিসরে রাজপথ থেকে মুরসিপন্থীদের সরিয়ে দিতে গত বুধবার সরকারি বাহিনীর রক্তক্ষয়ী অভিযানের পর জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। ওই দিনের অভিযানে নিহত হয় অন্তত ৬৩৮ জন। বিক্ষোভকারীদের ওপর বলপ্রয়োগের নিন্দায় সরব হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

জরুরি অবস্থা ভেঙে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখায় সেনা ও পুলিশের গুলিতে প্রাণহানি বাড়ছে মিসরে।

মিসরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মুরসিকে গত ৩ জুলাই সেনাবাহিনী ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই বিক্ষোভ করে আসছে তাঁর সমর্থকেরা। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মুরসিপন্থীদের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত শত শত ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে।

শেয়ার করুন