এতে তারা বলেন, কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হলে দারিদ্র্য বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংক ও এর সহযোগী সংস্থাগুলোর ভূমিকা ব্যাহত হবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ব্লুমবার্গ জানায়, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ১৬ জন এবং প্রতিনিধি পরিষদের ১৬ জন সদস্য এক চিঠিতে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
তারা বলেছে, সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্যের পিছনে মূল ভূমিকা রাখা এর ঋণগ্রহীতা ও শেয়ার মালিকদের ক্ষমতা খর্ব হবে।
সিনেটর বারবারা বক্সার, মাইকেল বি এনজি, মার্ক আর ওয়ার্নার, টিম জনসন এবং হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্যদের মধ্যে রোসা ডি লরো, কিথ এলিসন, জোসেফ ক্রাউলি, এরিক পলসেন, জিম ম্যাকডারমট চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।
চিঠিতে বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের সদস্য হিসেবে আমরা আপনার (শেখ হাসিনা) প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, কমিশনের সুপারিশ আমলে না নেয়ার জন্য। এটা বাংলাদেশে দারিদ্র্য নিরসনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকাকে ক্ষুন্ন করবে।”
তারা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের নিরাপত্তা এবং এর স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয়েরই আগ্রহ রয়েছে।
তবে গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের সাম্প্রতিক প্রস্তাব, যা ‘বাস্তবিক অর্থে নোবেল জয়ী প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ পাল্টে দেবে’ তা নিয়ে তারা অস্বস্তির মধ্যে পড়েছেন।
একই আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরেকটি খোলা চিঠি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের ৪০ জন খ্যাতিমান ব্যক্তি।
তাদের মধ্যে নোবেল বিজয়ী আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাডেলিন আলব্রাইট, নরওয়ের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হারলেম ব্র্যান্ডল্যান্ড, পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট আলেজান্দ্রো টলেডো, কেনেডি সেন্টার ফর জাস্টিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি, বিশ্বব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক জ্যান পিয়েরেজ ও ভার্জিন গ্রুপের চেয়ারম্যান রিচার্ড ব্র্যানসনের মতো খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি রয়েছেন।
ব্লুমবার্গকে পাঠানো ওই চিঠিতে নির্বিঘ্নে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনা নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করা হয়।
তবে গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের প্রস্তাবে গ্রামীণ ব্যাংক ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কল্যাণের বিষয়টি দেখা যায়নি বলে মনে করেন তারা।
“আমরা মনে করি, কমিশন ও এর সদস্যরা আপনার সরকারকে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করছে এবং তা বাংলাদেশের জনগণ ও তাদের মিত্রদের একটি বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।”
কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন থেকে বিরত থেকে গ্রামীণ ব্যাংককে ‘ধ্বংসের’ হাত থেকে রক্ষার জন্য শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান তারা।
চিঠিতে বলা হয়, “আপনার এবং আপনার অর্থ মন্ত্রণালয়ের গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের সুপারিশগুলো নাকচ করার ক্ষমতা রয়েছে। আমরা মনে করি ওই গুলোর বাস্তবায়ন হবে ধ্বংসাত্মক।”
এ চিঠির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মোবাইলে ব্লুমবার্গকে বলেন, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই।
আর এটাকে নিজেদের জন্য ইতিবাচক বলে বলে মনে করছেন গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক তাহসিনা বেগম।
ব্লুমবার্গকে তিনি বলেন, “বিশ্ব নেতৃত্ব আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এটা সুখবর। আশা করছি, সরকার এখন তাদের কথায় গুরুত্ব দেবে। গ্রামীণ ব্যাংক যেমন আছে তেমনি চলতে দেয়ার জন্য সরকারকে বোঝাতে চেষ্টা করেছি আমরা।”