আগামী নির্বাচনে যে সরকারই ৰমতায় আসুক হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির আমির আলস্নামা শাহ আহমদ শফি৷ তিনি বলেন, হাসিনাকে ৰমতা থেকে নামিয়ে সেখানে অন্য কাউকে বসানোর কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই৷ আমাদের সংগঠন অরাজনৈতিক৷ হাসিনার জায়াগায় যে-ই আসুক আমরা একই দাবি তুলে ধরবো৷
ইংরেজি দৈনিক ‘ঢাকা ট্রিবিউন’কে দেয়া এক সাৰাতকারে এসব কথা বলেন হেফাজতে ইসলামের আমির আলস্নামা শাহ আহমদ শফি৷
এসময় মতিঝিলের হেফাজত সমাবেশে সরকারি অভিযানের প্রসঙ্গ তুলে আলস্নামা শফি বলেন, অনেক হেফাজতকর্মী হত্যা করা হয়েছে৷ এজন্য আমরা কারো কাছে বিচার চাইনি৷ আমরা আলস্নাহর দরবারে বিচার চেয়েছি৷ আমরা চাইলে এই ইসু্যতে পুুরো দেশ অস্থীতিশীল করে তুলতে পারতাম৷
আলস্নামা শফি বলেন, আমরা আলস্নাহ ও রাসূলের (সা.) এর ওপর বিশ্বাস থেকেই আন্দোলনে নেমেছি৷ আমরা ৰমতা চাই না কিংবা কাউকে ৰমতায় বসানোর কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই৷ কাউকে ৰমতা থেকে নামিয়ে আমাদের কোনো লাভ নেই৷ আমরা এই মাদ্রাসাতেই থাকবো৷
তিনি বলেন, সরকার আমাদের দাবিগুলোর একটিও মানেনি৷ তারা যদি একটি দাবিও মানতো এবং আমাদের বলতো পরবর্তীতে এগুলো ধীরে ধীরে বিবেচনা করা হবে, এটুকুই যথেষ্ট৷ তাহলে আমরা চুপ হয়ে যেতাম৷
‘মতিঝিল অভিযানে কতজন নিহত হয়েছে সরকার আপনাদের কাছে এর তালিকা চেয়েছে’ ঢাকা ট্রিবিউনের এমন প্রশ্নের জবাবে আলস্নামা শফি বলেন, আপনারা শিৰিত ব্যক্তি৷ আপনারাই বলেন- আমরা কেন তালিকা প্রকাশ করতে যাবো? সরকার গণহত্যা চালিয়েছে এবং এর তালিকা প্রকাশ করাও সরকারেরই কাজ৷
তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও কি এমন নজির রয়েছে যে নামাজরত মানুষের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে? আমাদের লোকেরা ইবাদত-বন্দেগি করছিলো৷ এসময় সরকার মুসলিস্নদের ওপর আক্রমণ চালায়৷ বলতে পারেন-এই ধরনের অভিযান চালিয়ে রাসত্মা ফাঁকা করার কোনো দরকার ছিলো?
এসময় আলস্নামা শফির পৰে তার সেক্রেটারি মুনির আহমেদ বলেন, হেফাজতের কতকর্মী হত্যা করা হয়েছে এর তালিকা সরকারকেই প্রকাশ করতে হবে৷ হুজুর (আলস্নামা শফি) কোরআন পোড়ানোর ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷ প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন- ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে৷ কিন্তু এখনো পর্যনত্ম কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ আমরা বারবার সরকারের কাছে এ ঘটনার তদনত্মের জন্য একটি কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছি৷ কিন্তু সরকার কেন তা করছে না৷
এসময় আলস্নামা শফিও বলে উঠেন- হঁ্যা, কেন সরকার তদনত্ম কমিটি গঠন করছে না৷
মুনির আহমদ বলেন, হুজুর এ ঘটনা তদনত্মের জন্য একটি জুডিসিয়াল কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন৷ জুডিসিয়াল কমিশন গঠন করলে সমস্যটা কোথায়? এর জন্য আসলে বাধাটা কী?
তিনি বলেন, আমাদের লোকেরা নাকি ওই দিন গাছ কেটেছে৷ আপনারা তো জানেন- হেফাজতের লোকদের কাছে ওই দিন চিড়া-মুড়ি-পানি এবং জায়নামাজ ছাড়া আর কিছু ছিল না৷ তাহলে তারা গাছ কাটলো কীভাবে?
সিটি নির্বাচনে অনেক হেফাজতকর্মী প্রার্থীদের পৰে কাজ করেছেন? তাহলে হেফাজত কী অরাজনৈতিক?
এর জবাবে আলস্নামা শফি বলেন, যারা সিটি নির্বাচনে হেফাজত নামে প্রচারণা চালিয়েছেন তারা আমাদের কর্মী নন৷ তারা ভুয়া হেফাজত৷ তবে একটি কথা মনে রাখবেন- আসল বা প্রকৃত কিছু থাকলেই কিন্তু কেবল তার নকল বের হয়৷
জামায়াত নেতা আলী আহমদ মুজাহিদের রায়কে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আলস্নাম শফি বলেন, এই ইসু্যতে আমাদের কোনো মনত্মব্য নেই৷ কারণ, আমাদের রাজনৈতিক কোনো লৰ্য নেই৷ আমরা কোনো রাজনৈতিক সস্নোগানও দেই না৷ আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, আমরা অরাজনৈতিক৷