আপনি হয়তো কল্পনাও করতে চাইবেন না যে, আপনার গাড়ির সব কিছু ঠিকঠাক থাকার পরও মাঝরাস্তায় সেটা অচল হয়ে মারাত্মক কোনো দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে। সব চেয়ে বড়ো কথা, এজন্য আপনি মোটেও দায়ী নন। দায়ী অন্য কেউ, যে আপনার গাড়িটা হ্যাক করে এ দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। আবার, টয়লেটে ঢোকার পর টের পেলেন টয়লেটের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা হ্যাক করে ঘন ঘন ফ্ল্যাশ করাচ্ছে কোনো দুর্বৃত্ত। নিশ্চয় এমনটা চাইবেন না কেউই।
সম্প্রতি আওঅ্যাকটিভ নামের একটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের গবেষকেরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, দূর থেকে হ্যাক করে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে দুর্বৃত্তরা। এক খবরে জানিয়েছে বিবিসি।
এদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত ব্ল্যাক হ্যাট ও ডেভকন কম্পিউটার সিকিউরিটি সম্মেলনে গবেষক শার্লি মিলার ও ক্রিস ভ্যালাসেক গাড়ি হ্যাক করার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন।
গবেষকেরা দাবি করেছেন, চালু অবস্থায় একটি গাড়ি হ্যাক করে চালককে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় করে ফেলা সম্ভব। গবেষকেরা আধুনিক হাইব্রিড একটি গাড়ি নিয়ে তাঁদের এ পদ্ধতির ওপর পরীক্ষা চালান। অনেকেই এখন আধুনিক প্রযুক্তির বেশ কিছু গাড়ি হ্যাক করা যাবে বলে সংশয় প্রকাশ করছেন।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, হ্যাকাররা এখন ইমেইল হ্যাক বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরির বিষয়গুলো থেকে আরও উন্নত হ্যাকিং টুল নিয়ে কাজ করছে। এখন বাড়ি-গাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে ফেলা বা মানুষের শরীরে লাগানো বায়োমেডিক্যাল যন্ত্রপাতি হ্যাক করার কৌশল উদ্ভাবন করেছে তাঁরা।
গাড়ি হ্যাক প্রসঙ্গে গবেষকেরা জানিয়েছে, বর্তমানে দূর থেকে গাড়ি হ্যাক করার অনেক উপায় রয়েছে। ব্লুটুথ. তারবিহীন টায়ার সেন্সর, টেলিম্যাটিকস ইউনিট। গাড়িতে ইন্টারনেট যুক্ত হলে তা হ্যাক করা আরও সহজ হয়ে যাবে বলেই আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা।
তবে সুখের কথা হচ্ছে, হ্যাকাররা যে দূর থেকে গাড়ি হ্যাক করতে পারে এ বিষয়টি নিয়ে সচেতন হয়েছে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। গাড়ির নিরাপত্তায় ও হ্যাকিং ঠেকানোর প্রযুক্তি নিয়ে নিশ্চয় কাজ করবে তারা।
গাড়ি ছাড়াও টেলিভিশন, বৈদ্যুতিক বাতি, স্মার্টফোন হ্যাক করা সম্ভব বলেও জানিয়েছেন গবেষকেরা। গবেষকেরা আরও জানিয়েছেন, হ্যাকারদের কাছ থেকে আধুনিক প্রযুক্তির টয়লেটও নিরাপদ নয়। টয়লেটও হ্যাক করতে পারে দুর্বৃত্তরা।