মিসরের মন্ত্রিসভা ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকদের বিক্ষোভ বন্ধের জন্য গতকাল বুধবার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে মুরসিপন্থীদের বিক্ষোভে ৮২ জন নিহত হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই আবার রক্তক্ষয়ী সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মিসরের পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জার্মানির দূত পাঠানোর উদ্যোগের মধ্যে দেশটির মন্ত্রিসভা এ সিদ্ধান্ত নিল।
সেনাবাহিনী ও সেনা-সমর্থিত সরকারের পক্ষ থেকে সহিংসতার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারির পরও মুরসি-সমর্থকেরা তাঁকে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন।
মন্ত্রিসভা এক বিবৃতিতে বলেছে, কায়রোর দুটি চত্বরে মুরসিপন্থীদের বিক্ষোভ ‘জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি’। এতে বলা হয়, সরকার এ বিপদের অবসান ঘটানোর জন্য সংবিধান ও আইনের আওতায় যা কিছু প্রয়োজন, তা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিচ্ছে।
মুসলিম ব্রাদারহুড সরকারের এ হুঁশিয়ারি তাত্ক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। আন্দোলনকারী জোটে ব্রাদারহুডের মুখপাত্র জিহাদ এল-হাদ্দাদ বলেন, ‘কিছুই বদলাবে না।’ তিনি সরকারের আদেশকে দেশবাসীকে ভীতি প্রদর্শনের চেষ্টা বলে নাকচ করে দেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই বলেছিল, মুরসিপন্থী বিক্ষোভকারীদের ‘শিগগিরই’ উচ্ছেদ করা হবে। তবে কখন বা কবে, তখন তা বলা হয়নি।
উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়ে মিসরের বিচার বিভাগীয় সূত্র জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের হত্যার ঘটনায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে মুসলিম ব্রাদারহুডের তিন নেতার বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সূত্র জানিয়েছে, ব্রাদারহুডের এক পলাতক নেতা এবং বর্তমানে বন্দী তাঁর দুই সহকারীকে বিচারের আওতায় আনা হবে। অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগের দিন গত ৩০ জুন ব্রাদারহুডের প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীদের হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে আফ্রিকান ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল গোপন স্থানে আটক প্রেসিডেন্ট মুরসির সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাশটন মুরসির সঙ্গে সাক্ষাত্ করার পরদিন আফ্রিকার জোটটির প্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কংগ্রেসের দুজন প্রভাবশালী সিনেটরকে মিসর সফরে যেতে বলেছেন। নতুন নির্বাচনের জন্য মিসরের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের আহ্বান জানাতে তাঁদের সে দেশে যেতে বলছেন ওবামা। দুই সিনেটরের বরাত দিয়ে গতকাল মার্কিন গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশ করা হয়। প্রভাবশালী ওই দুই সিনেটর হলেন বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির নেতা লিন্ডসে গ্রাহাম ও জন ম্যাককেইন। রয়টার্স ও এএফপি।