নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে বুধবার। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অনেক দলই এখনো ইসিতে হিসাব জমা দেয়নি। তবে শেষ মুহুর্তে কয়েকটি দলের হিসাব জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
মঙ্গলবার জামায়াত, খেলাফত মজলিশসহ ৬টি দল হিসাব জমা দিয়েছে। এছাড়া ৪টি দল আগামী আগস্ট পর্যন্ত সময় চেয়ে ইসিকে চিঠি দিয়েছে। প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে দলের পূর্বের পঞ্জিকা বছরের হিসাব দেওয়ার বিধান রয়েছে।
৩৯টি দলের মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র ১৪টি দল তাদের বিগত বছরের আর্থিক লেনদেনের হিসাব জমা দিয়েছে। দলগুলো হচ্ছে- জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিশ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, জমিয়াতে ওলামা বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, গণফোরাম, খেলাফত মজলিস, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। এছাড়া জাতীয় পার্টি-জেপি, বিকল্প ধারা, সাম্যবাদী দল, ওয়ার্কার্স পার্টি এক মাসের সময় চেয়ে কমিশনকে চিঠি দিয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ মঙ্গলবার বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেসব দল আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেবে না, তাদের কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেওয়া হবে। এর পরও যদি কোনো দল ব্যর্থ হয় সে ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে আইন ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কেউ যদি সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করে তবে সে বিষয়ে কমিশন বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত ১৩ জুলাই ৩৯টি দলের সাধারণ সম্পাদক/ মহাসচিবদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হিসাব জমা দেওয়ার তাগিদ দিয়ে ইসি থেকে চিঠি দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর ৯০-এইচ (১) (সি) ধারা অনুযায়ী নিবন্ধিত কোনো দল পরপর তিন বছর বার্ষিক লেনদেনের হিসাব জমা দিতে ব্যর্থ হলে কমিশন সে দলের নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে।
বিভিন্ন দলের নেতাদের কাছে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নিবন্ধিত বেশিরভাগ দলেরই বার্ষিক লেনদেনের হিসাব জমা দেওয়ার বিষয়ে তেমন কোনো প্রস্তুতি নেই। এখনো চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি ফার্ম দিয়ে অডিট কাজই শুরু করেনি তারা।
এদিকে নির্বাচন কমিশন বলছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যেসব দল অডিট রিপোর্টের কপি জমা দেবে না, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ২০০৮-এর ধারা ৯ (খ) তে বলা হয়েছে, প্রতি বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অব্যবহিত পূর্বের বছরের সংশ্লিষ্ট দলের আর্থিক লেনদেন একটি রেজিস্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি ফার্ম দিয়ে অডিট করিয়ে সে রিপোর্টের একটি কপি নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে।