স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সহস্রাব্দের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দাতা দেশ ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সংসদ-সদস্যসহ সকল স্তরের জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন। তিনি রাজধানীর একটি হোটেলে সংসদ এবং মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্যের জন্য জবাবদিহি শীর্ষক দু’দিনব্যাপী বহুদেশীয় সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিতির ভাষণে এ আহবান জানান। তিনি বলেন, সবার জন্য স্বাস্থ্য এবং মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে প্রত্যন্ত এলাকায় সকলের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানো একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যেহেতু সংসদ-সদস্যগণ জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি তাই তারা এসব কাজে সরাসরি ভূমিকা রাখলে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সহজ হবে। সেমিনারের বিভিন্ন দিকের উল্লেখ করে স্পিকার আশা প্রকাশ করেন, সেমিনারে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর জনপ্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের আলোচনা ও মত বিনিময়ে মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সংসদ-সদস্যদের জন্য অবদান রাখার সুযোগ সৃষ্টি ও জাতীয় জবাবদিহি কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক অংগীকার একান্ত আবশ্যক। তিনি এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে মাতৃত্ব, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংসদীয় ককাস গঠনের উল্লেখ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এ ককাস গঠিত হলে বাংলাদেশে মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে আরো গতি আসবে। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ ক্যাপ্টেন (অবঃ) মজিবুর রহমান ফকির, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ড. তুষারা ফার্নান্দো, ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) প্রতিনিধি সিনেটর সালমা আতাউল্লাহজান এবং সংসদ সচিব মোঃ মাহফুজুর রহমান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
জাতীয় সংসদ, আইপিইউ ও ডব্লিএইচও এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ভারত, কেনিয়া, মালাওয়ি, উগান্ডা, জিম্বাবুয়ে ও নাইজেরিয়ার সংসদ-সদস্যগণ অংশগ্রহণ করছেন। এছাড়া আইপিইউ, ডব্লিএইচও, ইউএনএফপিএ, ওয়ার্ল্ড ভিশন, ইউএনডিপি ও হোয়াইট রিবনসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিগণও সেমিনারে অংশ নিচ্ছেন। স্পিকার বলেন, সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সংসদকে জবাবদিহির কেন্দ্র হিসেবে চিহিৃত করা হয়েছে। ২০১২ সালে আইপিইউ’র এক রেজ্যুলেশনে মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্য সংরক্ষণে সংসদের ভূমিকাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। তিনি মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সংসদ ও সুশীল সমাজের মধ্যে সক্রিয় সহযোগিতা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দৃঢ় যোগাযোগের উপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশে শিশু ও মাতৃ মৃত্যু হার হ্রাস, নবজাতক মৃত্যুহার হ্রাস ও মহিলা এবং শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে বাংলাদেশের সাফল্যের উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়ে সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রসংশনীয় সাফল্য অর্জন করেছে।