সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছে রাজনীতির ময়দানে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অবশ্য রাজনৈতিক ফায়দা নিতে একেবারেই দেরি করেনি। বিএনপি নেতারা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ যে ষড়যন্ত্র করছে, তার প্রমাণ জয়ের বক্তব্য। দেশে এসে নির্বাচন ও রাজনীতি নিয়ে জয়ের বক্তব্য দেওয়া ও ফেসবুকে অফিসিয়াল পেজ খুলে সেখানে বড় করে মায়ের সঙ্গে তার ছবি দেওয়া ইত্যাদি ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, জয় কি তাহলে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে আসছেন?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবার দেশে ফিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন এবং প্রায় প্রতিদিনই সংবাদপত্রের খবর হচ্ছেন। কয়েক মাস ধরে তার বিয়ে বিচ্ছেদের খবর নিয়ে জোর গুজবের একপর্যায়ে ১৬ জুলাই স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে তিনি ঢাকা আসেন।
গত মঙ্গলবার জয় যুবলীগের ইফতার মাহফিলে বলেন, তার কাছে তথ্য আছে, আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে। তার এ বক্তব্যের পর থেকে তার নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে জয় রাজনীতিতে আসবেন, এটাই স্বাভাবিক। তিনি রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যোগ দিচ্ছেন, এতে বোঝা যাচ্ছে রাজনীতিতে তার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।জয়ের কিছু ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড ইতোমধ্যেই জনগণের মধ্যে আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। ফেসবুকে নিজের নামে খোলা একটি পাতায় শনিবার প্রথমবারের মতো একটি স্ট্যাটাস বা অবস্থান সম্পর্কিত বক্তব্য পোস্ট করেন জয়। সেখানে তিনি তার জন্মদিন ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে পরিবারের সঙ্গে কীভাবে কাটাচ্ছেন সেটি উল্লেখ করেন। একই দিন তিনি একটি ছবিও পোস্ট করেন, যেখানে দেখা যাচ্ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রান্নাঘরে খাবার রান্না করছেন। ফেসবুকের ওই পাতায় গিয়ে দেখা যায়, গতকাল বিকেল পর্যন্ত রান্নারত প্রধানমন্ত্রীর ওই ছবিটি সাড়ে তিন হাজারের বেশিবার শেয়ার হয়েছে। সজীব ওয়াজেদ জয় নামের ওই পাতাটি গত ২৭ জুন খোলা হলেও ২৮ জুলাই প্রথম কোনো পোস্ট দেওয়া হলো। বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান সময়ের কর্মকাণ্ডে অনেকটাই স্পষ্ট যে জয় রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জয় রাজনীতিতে আসতে পারেন, তা নিয়ে আমাদের কোনো কথা নেই। তিনি রাজনীতিতে না এসেও যখন নির্বাচন ও বিরোধী দল সম্পর্কে মন্তব্য করবেন, তখন তা রাজনীতির আওতাভুক্ত বলে আমরা মনে করি। এ কারণে আগামী নির্বাচন নিয়ে তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন, আমরা তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছি।
উল্লেখ্য, সজীব ওয়াজেদ জয় মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং সেখানেই তিনি বসবাস করেন। গত সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে কিছু কিছু প্রচারে অংশ নিলেও প্রকাশ্য রাজনীতিতে তাকে কখনও দেখা যায়নি। ২০০৯ সালে তিনি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য পদ নেন। সূত্র: বিবিসি