নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জাপানের ওসাকায় তিনি অনেকগুলো মিটিং এ অংশগ্রহন করেন।
এর মধ্যে ওসাকার বিশজন শীর্ষস্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তি দুটি পৃথক মিটিং এ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এর সাথে সাক্ষাত করেন, যার উদ্দেশ্য ছিল জাপান ও অন্যান্য স্থানে সামাজিক ব্যাবসায়ের সম্ভাবনাগুলোকে অন্বেষণ ও বিশ্লেষণ করে দেখা।
আন্তর্জাতিক একটি ব্যাংক এই মিটিংগুলো আয়োজন করে।
গত ২৭-২৮ জুলাই জাপানের ওসাকা ও ২৫-২৬ জুলাই দঃ কোরিয়ার রাজধানী সিউল ভিজিট করেন।
একটি বৃহদাকার চেইন শপিং-মল ইউনূস সেন্টারের সাথে যৌথ- উদ্যোগে সামাজিক ব্যবসা শুরুর আগ্রহ প্রকাশ করে।
নোবেল লারিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত প্রায় ১০০০ শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও তিনি ওসাকার শীর্ষস্থানীয় নারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে দিনব্যাপী সভা করেন এবং সামাজিক ব্যবসায় তাদের অংশগ্রহণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এছাড়া, নাগানো অঞ্চলের গভর্নর মিঃ সুইচি অ্যাবে তাঁর প্রদেশে যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করছেন, তার কাঠামো নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
একইসাথে তিনি প্রফেসর ইউনূসকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হবার প্রস্তাব দেন।
উল্লেখ্য, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বাণিজ্যিক অনুষদ থাকবে এবং তারা সামাজিক ব্যবসা কোর্সগুলো পরিচালনা করার জন্য ইউনূস সেন্টারের সাথে যুক্ত হতে ইচ্ছুক।
প্রখ্যাত জিকেই গ্রুপ অব কোম্পানিজ- যা ৫২টি কলেজের মাধ্যমে ৬০০টি শাখায় কারিগরী প্রশিক্ষণের নেটওয়ার্কিং এর জন্য সুপরিচিত, তার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা-মিঃ কুনিহিকো ইউকিফুনও প্রফেসর ইউনূসের সাথে দেখা করেন।
প্রফেসর ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার ধারণাকে জনপ্রিয় করার জন্য জিকেই মাঙ্গা কোম্পানির পরিচালক মিঃ কাকুমেত মাঙ্গা সিরিজ বই তৈরি করবেন, এই সিরিজের প্রথম বইটি এই বছরই প্রকাশিত হবে।
এ বিষয়ে আলোচনার জন্য তিনি প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে দেখা করেন। কমিক বইকে জাপানি ভাষায় মাঙ্গা বলা হয়ে থাকে।
এটি বিভিন্ন বিষয়ক কমিক নিয়মিত জাপানী পাঠকদের কাছে, বিশেষ করে তরুণ পাঠকদের আকৃষ্ট করে এবং মাঙ্গা সেখানে খুবই জনপ্রিয়।
উল্লেখ্য, প্রফেসর ইউনূসের জীবন ও কাজের ওপর তৈরি মাঙ্গার সকল ড্রয়িং এ বাংলাদেশের বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এই বছরের শুরুতেই জিকেই এবং তাদের শিল্পীরা বাংলাদেশ ভিজিট করেছে।
এছাড়াও পাঁচজন সিনিয়র কর্মকর্তার একটি প্রতিনিধিদলসহ টয়োটা মোটর কোম্পানির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মি. নবুইয়্যোরী কোদাইরা প্রফেসর ইউনূসের সাথে সাক্ষাত করেন এবং তারা সামাজিক ব্যবসায় টয়োটার অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা করেন।
এদিকে গত সাপ্তাহের শুরুর দিকে এসকে গ্রুপের মালিক ও চেয়ারম্যান তার কর্মকর্তাদের সামাজিক ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা প্রদানের জন্য প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে সিউলে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
এসকে গ্রুপ দঃ কোরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম বহুজাতিক কোম্পানি, যাদের সম্পদের পরিমাণ ১৫০ বিলিয়ন ডলার।
প্রফেসর ইউনূস কোরিয়াতে আসার আগেই এসকে গ্রুপ কোম্পানির কর্মকর্তারা সামাজিক ব্যবসার ওপর সাপ্তাহব্যাপী একটি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সামাজিক ব্যবসা সংক্রান্ত তাদের প্রশিক্ষণের পরিসমাপ্তি টানেন এবং কোরিয়া ও অন্যান্য দেশে কিভাবে সামাজিক ব্যবসার সূত্রপাত করা যায় সে বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেন।
‘হ্যাপিনেস ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংস্থা, যা এসকে গ্রুপ অব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছে, এর মাধ্যমে এসকে গ্রুপ তাদের কাজগুলো তুলে ধরে এবং তারা এই ফাউন্ডেশনের কর্মসূচির মধ্যে সামাজিক ব্যবসাকে অন্তর্ভুক্ত করে কাজ করতে তাদের আগ্রহের কথা প্রকাশ করে।
এ বছরের শুরুর দিকে প্রফেসর ইউনূস এসকে গ্রুপের চেয়ারম্যানের অনুরোধে ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের পাশাপাশি তার সাথে একাধিক মিটিং করেন।