বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) সই হতে যাচ্ছে।
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা গতকাল সোমবার পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি দুপুরে পররাষ্ট্রসচিববের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে দেখা করেন।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্রসচিব সাংবাদিকদের বলেন, টিকফাসহ সইয়ের অপেক্ষায় থাকা বেশ কয়েকটি চুক্তির ব্যাপারে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে টিকফা কবে কোথায় সই হবে, সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমেরিকা অণু বিভাগের মহাপরিচালক মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গত ১৭ জুন মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত টিকফার ইংরেজি ভাষ্য ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত চুক্তিটির সঙ্গে তাদের চুক্তিটির মিল রয়েছে কি না, সেটি যুক্তরাষ্ট্র যাচাই করে দেখবে। মূলত চুক্তি নিয়ে যেন শেষ মুহূর্তে কোনো সংশয় না থাকে, তাই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসব প্রক্রিয়া শেষ হলে দুই পক্ষ চুক্তির দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবে।
পররাষ্ট্রসচিব ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত আলাদাভাবে সাংবাদিকদের জানান, এক ঘণ্টার বেশি সময় স্থায়ী এ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের পণ্যের অবাধ বাজারসুবিধা (জিএসপি) ফিরে পাওয়া, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব, রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবসন এবং পররাষ্ট্রসচিবের সাম্প্রতিক মিয়ানমার সফর গুরুত্ব পেয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্র্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদিত সন্ত্রাসবাদ দমনের সমঝোতা স্মারকের একটি খসড়া বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত এ মাসের শেষ সপ্তাহে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন। জিএসপি বাতিলের পর বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে তিনি মার্কিন কর্মকর্তাদের অবহিত করবেন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: গতকাল সচিবালয়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা। এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের পোশাকশিল্পকে সারা বিশ্বে নাম্বার ওয়ান ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে শর্ত হলো, বাংলাদেশকে রানা প্লাজা ধসের মতো ঘটনা রোধ করতে হবে।
সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর কক্ষে আলাপকালে ড্যান মজীনা বাংলাদেশের নারী ও শিশু উন্নয়নে সরকারের সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন।