বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আগামী দিনে মেধার ভিত্তিতে চাকরি হবে। এ সরকারের আমলে বাদ গেলেও ভবিষ্যতে সবার চাকরি হবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে ইসলামী ঐক্যজোট আয়োজিত ইফতার মাহফিলে বিরোধীদলীয় নেতা এসব কথা বলেন। ইফতারের আগে ‘ফজলুল হক আমিনীর জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করা হয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের আন্দোলনকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে বিসিএস থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার কঠোর সমালোচনা করেন বিরোধীদলীয় নেতা। কোটা বাতিলের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের প্রতিও সমর্থন জানান তিনি। খালেদা জিয়া বলেন, শাহবাগে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগ সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনেরও কঠোর সমালোচনা করেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে জনগণ ভোটের মাধ্যমে সরকারকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার অপেক্ষায় আছে। এই সরকারের আমলে কোনো উন্নয়ন হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, সরকার সাড়ে চার বছরে কোনো ভালো কাজ করেনি। মিথ্যাচার, অত্যাচার ও দুর্নীতি ছিল তাদের মূলনীতি। আগামী দিনে ক্ষমতায় গেলে ব্যাপক পরিবর্তন ও সংস্কার করে জনকল্যাণে কাজ করা হবে। পাশাপাশি এই সরকারের আমলের খুন, গুম, দুর্নীতিরও বিচার করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো উপনির্বাচন বা স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি দাবি করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ডহীন ও অথর্ব। তাদের নিজেদের কথা বলার যোগ্যতা নেই। তারা শক্ত হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হতো। কিন্তু তাদের কথা বলার কোনো অধিকার নেই। তিনি দাবি করেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে বিএনপি ও জনগণের শক্ত অবস্থানের কারণে সরকার শত চেষ্টা করেও ভোট ছিনতাই করতে পারেনি।
এ সরকারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, মানুষের জীবন নিরাপদ নয়। ব্যবসা প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। কোনো বিদেশি বিনিয়োগ নেই। সরকারের লুটপাট, দুর্নীতির কারণে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। জনশক্তি রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এই ‘দুরবস্থা’ থেকে দেশকে মুক্ত করতে এবং ‘গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ইসলামি মূল্যবোধ রক্ষায়’ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।
ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, রফিকুল ইসলাম মিয়া এবং ১৮ দলের শরিক দলগুলোর শীর্ষনেতারা উপস্থিত ছিলেন।