সাংবাদিক নির্যাতনের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, এজন্য সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির বিরুদ্ধে সংসদ ব্যবস্থা নিতে পারে।
দুই টেলিভিশন সাংবাদিককে পেটানোর পর দুদিন ধরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে এটাই আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল কোনো নেতার প্রথম প্রতিক্রিয়া।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারীও।
তিনি রোববার রাতে কারওয়ান বাজারে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “রনির ঘটনা দুঃখজনক, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত।”
একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহের জন্য বেসরকারি ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের দুই সংবাদকর্মী শনিবার রাজধানীর তোপখানা সড়কের মেহেরবা প্লাজায় সংসদ সদস্য রনির কার্যালয়ে গিয়ে হামলার শিকার হন।
ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, প্রতিবেদক ইমতিয়াজ মমিন সনি ও ক্যামেরাম্যান মহসিন মুকুলকে মারধর করছেন রনি ও তার সঙ্গীরা, লাথিও মারছেন।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সরকারি দলের সংসদ সদস্যের এই আচরণের নিন্দা জানিয়েছে। রনিকে কোনো অনুষ্ঠানে না ডাকতে আহ্বান জানিয়েছেন বেসরকারি সব টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা।
রনির বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না- জানতে চাইলে হানিফ বলেন, “রনি দলের কোনো পর্যায়ের নেতা না, আওয়ামী লীগ মনোনীত জাতীয় সংসদ সদস্য। তার বিরুদ্ধে সংসদ ব্যবস্থা নিতে পারে।”
নেতা না হলেও দলের সদস্য হিসেবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না- আবার জানতে চাইলে এই আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আগামীতে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা উঠলে তখন একটা সিদ্ধান্ত হতে পারে।”
শনিবারের ঘটনার পর সাংবাদিক নেতাদের উপস্থিতিতে রনি আহত সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চান। পাশাপাশি তাদের চিকিৎসা ব্যয় ও ক্যামেরার ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাসও দেন।
তবে সাংবাদিক পেটানোয় নিজে জড়িত ছিলেন না দাবি করে পটুয়াখালীর এই সংসদ সদস্য বলেন, কারা মেরেছে তা তিনি জানেন না। তবে যেহেতু ঘটনাটি তার অফিসের সামনে ঘটেছে তাই তিনি দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
দুই সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে এর সঙ্গে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের মালিক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সম্পৃক্ততার অভিযোগও আনেন পটুয়াখালীর এই সংসদ সদস্য।
মারধরের ঘটনায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করলে সালমানকে আসামি করে পাল্টা মামলা করেন রনি। পুলিশ দুটি মামলারই তদন্ত শুরু করেছে।
ইন্ডিপেন্ডেন্টের করা মামলায় রোববার নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন।