বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যা চেষ্টা মামলা’র চ‚ড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর বাদীর দেওয়া নারাজি আবেদন গ্রহণ করে তা আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল গাজী মামুনুর রশীদ।
রায়ের পরে গাজী মামুনুর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের এ রায়ের পর সেই মামলাটি এখন পুন:তদন্ত করতে হবে।
হাইকোর্ট সূত্র জানায়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার কলারোয়া থেকে যশোর যাচ্ছিলেন। তার গাড়িবহর কলারোয়া থানার সামনে এলে হামলায় আক্রান্ত হয়।
ওই ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মো. মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে সাতক্ষীরার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি নালিশি মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলার আবেদনে বলা হয়, দলীয় কর্মসূচি শেষে যশোর যাওয়ার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহর আক্রান্ত হয়। একটি যাত্রীবাহী বাস দিয়ে রাস্তা আটকে দিয়ে বহরের কয়েকজন সদস্যের ওপর হামলা ও আক্রমণ শুরু করলে শেখ হাসিনা গাড়ি থেকে নেমে আসেন। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। তবে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এ সময় তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ও দলীয় নেতাকর্মীরা ঘিরে তাকে গাড়িতে তুলে দেন। পরে ব্যারিকেড দেওয়া বাসটি সরিয়ে গাড়িবহর ওই এলাকা থেকে বের হতে সক্ষম হয়।
তৎকালীন স্থানীয় বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবের পরামর্শ ও নির্দেশে ওই হামলা হয় বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
পরে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০০৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওই তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন সন্তোষজনক না হওয়ায় পরবর্তীকালে বাদী ওই প্রতিবেদনের ওপর নারাজি আবেদন দাখিল করেন। ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নারাজি আবেদন খারিজ করলে দায়রা জজের আদালতে আবেদন করা হয়। ওই আদালতও আবেদনটি খারিজ করে দেন।
এ খারিজ আদেশের আদেশের বিরুদ্ধে মামলার বাদী হাইকোর্টে একটি রিভিশন মামলা দায়ের করেন। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ আগস্ট রুল জারি করে। ওই রুলের চ‚ড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট এ রায় দেন।