গোলাম আযমের ৯০ বছর কারাদণ্ডের রায় প্রত্যাখ্যান করে জামায়াতের ডাকা মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে। পাশাপাশি রায় প্রত্যাখ্যান করে ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের হরতালও চলছে।
রাজধানীতে ঢিলেঢালাভাবেই চলছে উভয়ের ডাকা হরতাল। রাজধানী থেকে দূর পাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। রাজধানীতে যান চলাচল অন্যদিনের চেয়ে কম থাকলেও জনজীবন স্বাভাবিক আছে।
দিনের শুরুতে রাজধানীতে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মিছিলটি শুরু হওয়ার সময়ই বাধা দেয় পুলিশ। এখন পর্যন্ত রাজধানীতে অপ্রীতিকর কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
সোমবার হরতাল শেষে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ হরতালের ঘোষণা দেয়া হয়।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘অব্যাহতভাবে সরকারের হত্যা, সন্ত্রাস, গণগ্রেপ্তার, গণনির্যাতনের প্রতিবাদে ও অবিলম্বে জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের মুক্তির দাবিতে আগামী মঙ্গলবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।’
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে করা একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের দিন সোমবারও সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে জামায়াত।
এ হরতালের সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অনেকে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
অন্যদিকে, গোলাম আযমের রায় প্রত্যাখ্যান করে তার ফাঁসির দাবিতে হরতাল পালন করছে গণজাগরণ মঞ্চ। হরতালে ঢাকার ২০ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা। মূল পয়েন্ট হিসেবে রয়েছে শাহবাগের গণজাগরণ চত্ত্বর।
২০ পয়েন্টের মধ্যে রয়েছে- মিরপুর-১০, প্রেস ক্লাব, খিলগাঁও, উত্তরা, টেকনিকেল, মোহাম্মদপুর টাউন হল, মিরপুর-১, বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকা, আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড ও ঢাকা কলেজ।
এসব এলাকায় গণজাগরণ মঞ্চের ডা. রুবেল, সঙ্গিতা ইমাম, শাকিল, আরিফ, নান্টু, সাগর, শুভ, সজিব, মাজরু ও নাঈম নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বয়স বিবেচনায় গোলাম আযমকে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এর মধ্যে এক নম্বর ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ১০ বছর, ২ নম্বর অভিযোগে পাক হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতায় ১০ বছর, ৩ নম্বর অভিযোগে ব্যক্তিগতভাবে নির্যাতনের দায়ে ২০ বছর, ৪ নম্বর পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পৃক্ততায় ২০ বছর এবং ৫ নম্বর হত্যা ও গণহত্যায় জড়িত থাকায় ৩০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়।