জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় পড়া চলছে। পূর্ণাঙ্গ রায় ২৪৩ পৃষ্ঠার। বেলা ১১টা দুই মিনিটে ৭৫ পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্ত রায় পড়া শুরু হয়।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে অন্য দুই বিচারপতি এজলাসে আসেন সকাল ১০টা ৪৭ মিনিটে। এর পাঁচ মিনিট আগে গোলাম আযমকে আসামির কাঠগড়ায় নেওয়া হয়।
সকাল ১০টা চার মিনিটে তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি মাইক্রোবাসে করে নিয়ে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের কারাকক্ষে আটক ছিলেন।
গোলাম আযমের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নিরাপত্তাবেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। ওই এলাকায় পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ (র্যাব) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ছাড়া নিরাপত্তার অংশ হিসেবে প্রেসক্লাবসংলগ্ন কদম ফোয়ারা সড়ক, শিক্ষা ভবনসংলগ্ন সড়ক, দোয়েল চত্বরসংলগ্ন সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। এতে এসব সড়ক দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে পথচারীরা চলাচল করতে পারছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাউকে সন্দেহ হলে তাঁর পরিচয়পত্র দেখছেন।
হাইকোর্টে প্রবেশের দুটি ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু মাজারসংলগ্ন ফটক দিয়ে বিচারক, আইনজীবী, সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। আদালত চত্বরের প্রতিটি পয়েন্টে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা।
ট্রাইব্যুনাল এলাকায় পুলিশের সাঁজোয়া যান। ছবি: মনিরুল আলমদুই ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলাগুলোর মধ্যে নানা কারণে গোলাম আযমের মামলাটি অন্যতম আলোচিত। ১৯৯২ সালে শহীদজননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা প্রতীকী গণ-আদালতে গোলাম আযমকে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ২০১০ সালের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর থেকে গোলাম আযমের বিচারের বিষয়টি আলোচিত হতে থাকে। তদন্ত শেষে প্রায় দুই বছর পর ২০১২ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। ওই বছরের ১১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল তাঁকে কারাগারে পাঠান। এক বছরের বেশি সময় ধরে এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক চলে। চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলার রায় অপেক্ষাধীন (সিএভি) রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
এর প্রায় তিন মাস পর গতকাল রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ আদেশে বলেন, সোমবার (আজ) গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। এ জন্য তাঁকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।