রংপুর বিভাগের আট জেলায় স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রকল্প (এলজিএসপি) বাস্তবায়ন নিয়ে হরিলুট চলছে। কাগজে-কলমে প্রকল্পের কাজ দেখানো হলেও মাঠপর্যায়ে অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে না। কাজ না করেই বরাদ্দকৃত টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পের অর্থ আত্দসাতের অভিযোগে আট জেলার ২০ জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মামলা হয়েছে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবসহ সাত প্রকল্প চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে এসব জনপ্রতিনিধি এ প্রকল্প থেকে দেড় কোটি টাকা আত্দসাৎ করেছেন। গত ২৯ মে থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত এই জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ছাড়া নিরীক্ষা প্রতিবেদনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ায় ৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদে সব ধরনের বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়া হলেও অনেকেই আদালতের নিষেধাজ্ঞা এনে স্বপদে বহাল থাকার চেষ্টা করছেন। রংপুর বিভাগীয় স্থানীয় সরকার শাখা সূত্রে জানা গেছে, বিভাগের পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের তিন চেয়ারম্যান ও ১৭ জন সদস্যের বিরুদ্ধে এলজিএসপির অর্থ আত্দসাতের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ ব্যবস্থা নিয়েছে। বরখাস্ত জনপ্রতিনিধিরা হলেন রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগাহ ইউপি চেয়ারম্যান সরওয়ার হোসেন মাখন, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও ধামশেনী ইউপি চেয়ারম্যান একরামুল হক, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ফরিদা বেগম ও সুফিয়া বেগম এবং সদস্য আমিনুল ইসলাম ও আবদুল আজিজ। এ ছাড়াও বরখাস্তের তালিকায় আছেন লালমনিরহাটের গোতামারী ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান, আতিয়ার রহমান, সন্ধ্যা রানী এবং কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউপি সদস্য আবদুল আজিজ, গোলাপ হোসেন, মিরাজ উদ্দিন, ধনেশ্বর রায়, মোজাফ্ফর হোসেন, কাবেজ আলী, আবু হোসেন, হামিদা বেগম, মিনতি রানী ও হেমলতা রায়। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী বলেন, ২০১১-১২ অর্থবছরে উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নে এলজিএসপির দ্বিতীয় পর্যায়ে ১১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা আত্দসাতের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২৯ জুন ১০ ইউপি সদস্যকে বরখাস্তের আদেশ দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। রংপুর বিভাগীয় কমিশনারে কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক রঞ্জিত কুমার বলেন, এলজিএসপির অনিয়ম রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প তদারকির দায়িত্ব প্রতিটি জেলার স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালকদের দেওয়ার পর অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।