সিটি কর্পোরেশনের মতো জাতীয় নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনদের হারাতে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
সোমবার রাতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জনগণ তাদের বার বার জানিয়ে দিচ্ছে, আর তোমাদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আমরা দেখতে চাই না। পাঁচ সিটি কর্পোরেশনে জনগণ ক্ষমতাসীনদের ৫-০ গোলে পরাজিত করেছে। আমাদের ঐক্য অটুট রেখে আগামীতে আরো বেশি গোলে পরাজিত করতে হবে।”
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রোজার পরে কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও জানান খালেদা।
বিএনপি প্রধান বলেন, “নির্দলীয় সরকার দিতে আওয়ামী লীগকে বাধ্য করা হবে। ওই দাবি মেনে নেয়া ছাড়া তাদের কোনো পথ থাকবে না।”
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র মনিরুজ্জামান মনি ও কয়েকজন কাউন্সিলর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দেখা করতে গেলে তিনি এসব বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে খালেদা জিয়ার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন মনি ও বিএনপি সমর্থক কাউন্সিলররা। পরে কাউন্সিলরদের হাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন রজনীগন্ধার স্টিক তুলে দেন।
নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, “সরকারকে বলব, এখনো সময় আছে, জনগণ কী চায়- তা বুঝতে চেষ্টা করুন। জনগণের রায় মেনে নিন।”
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদের বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “গাজীপুর নির্বাচনের প্রচারণায় তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন গাজীপুর গোপালগঞ্জের মতো আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। এই নির্বাচনে গাজীপুরের গোপালগঞ্জ শূন্য হয়ে গেছে। জনগণ তাদের লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে।”
“আগামীতে গোপালগঞ্জে কি অবস্থা হবে- তা বুঝা যায়।”
ক্ষমতায় যেতে পারলে দুটি পদ্মাসেতু নির্মাণ করার ঘোষণা দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি খুলনার রূপসা সেতু নির্মাণে সংসদে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, “এই সেতু আমরা নির্মাণ করেছি। অথচ প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন মিথ্যা কথা। ওই রূপসেতু নির্মাণের উদ্বোধনী দিনে আওয়ামী লীগ হরতাল ডেকেছিল।”
জঙ্গিবাদ বিষয়ে তিনি বলেন, “সরকার অপপ্রচার চালায়, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে। আলেম-উলামাদের দেখলে তারা জঙ্গি বলে। মুসলমান হলে জঙ্গি- এটা সঠিক নয়।”
“আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশে কোনো জঙ্গিবাদ নেই। আওয়ামী লীগই তার শাসনামলে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা জঙ্গিদের দমন করেছি।”
আওয়ামী লীগের আমলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বেশি নির্যাতিত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম ও নবনির্বাচিত মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহজাহান ওমর, নুরুল ইসলাম দাদু ভাই, অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান, মহানগর জামায়াত ইসলামীর নায়েবে আমীর মাস্টার শফিকুল আলম, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট লতিফুর রহমান লাবু, খেলাফত মজলিশের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নাসির উদ্দিন, খুলনার প্রথম মেয়র শেখ সিরাজুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করে দলের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
পরে রাত ১০টার দিকে ব্রুনাইয়ের রাষ্ট্রদূত হাজী আবদুর রাজাক বিন হাজী মোহাম্মদ হোসেইনি বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন।
বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়।