পাকিস্তানে ক্রিকেটের চেয়ে জনপ্রিয় আর কিছুই নেই। তাই চলচ্চিত্র জগতের দুরবস্থা কাটাতে দ্বারস্থ হতে হয়েছে ওই ক্রিকেটেরই। পাকিস্তানি ক্রিকেট তারকা শহীদ আফ্রিদির জীবনী নিয়ে তৈরি হওয়া একটি ছবি এখন অপেক্ষায় আছে বক্স অফিসে আলো ছড়াতে।
বিশাল বাজেটের এ ছবিটি নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে গোটা পাকিস্তানে। ছবিতে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে এসে আফ্রিদির একজন তারকা ক্রিকেটার হয়ে ওঠার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হবে। পাকিস্তানি মুদ্রায় ১০০ কোটি রুপিরও বেশি বাজেটের এ ছবিটির নাম ‘ম্যয় হু আফ্রিদি’ বা ‘আমিই আফ্রিদি’।
ছবিটির প্রযোজক ও পাকিস্তানের অন্যতম শীর্ষ অভিনেতা হুমায়ুন সাঈদ প্রথমে নায়ক হিসেবে নাকি আফ্রিদিকেই পছন্দ করেছিলেন। এ ব্যাপারে তাঁকে প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। তবে আফ্রিদি বিনয়ের সঙ্গেই সাঈদের প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দেন।
অভিনয় না করার কারণ আফ্রিদি উল্লেখ করেছেন তাঁর গোত্রের সংস্কৃতিকে, ‘প্রয়োজক আমাকে ছবিটির মূল চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমি প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দিয়েছি। কারণ, অভিনয় করার ব্যাপারে আমার গোত্রে নিষেধ আছে।’ এ ব্যাপারে আফ্রিদির পরিবারের সদস্যরাই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
হুমায়ুন সাঈদ জানিয়েছেন, ছবিটি আসন্ন রোজার ঈদে গোটা পাকিস্তানে মুক্তি পাবে। পাকিস্তানের পাশাপাশি এটি মধ্যপ্রাচ্য, এমনকি ভারতেও মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন সাঈদ।
ছবিটিতে নাকি পাকিস্তানের সামাজিক অবস্থার অনেক কিছুই উঠে এসেছে। দেশটিতে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যের মধ্যে নব্বইয়ের দশকে আফ্রিদি কীভাবে ক্রিকেটার হিসেবে উঠে এলেন, তারই এক জমাট গল্প এই ছবির মূল উপজীব্য।
সম্প্রতি ক্রিকেট উঠে এসেছে ভারতের চলচ্চিত্র জগতেও। বলিউডে কিছুদিন আগে ভারতীয় পেসার মুনাফ প্যাটেলের জীবনী নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ছবি।
১৯৯৬ সালের অক্টোবরে কেনিয়ায় একটি চার জাতি প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক হয় আফ্রিদির। নিজের অভিষেক ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ হয়নি তাঁর। দ্বিতীয় ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৭ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সারা বিশ্বকে চমকে দেন জাতিতে পাঠান এই ক্রিকেটার। একদিনের ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির ওই রেকর্ড আজও অম্লান। মারকুটে ব্যাটিংয়ের জন্য তিনি ক্রিকেট ইতিহাসে স্থায়ী জায়গা নিয়েই আছেন। টেস্ট খেলেছেন মাত্র ২৭টি। কিন্তু ৩৫৪টি একদিনের ম্যাচ ও ৫৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে আফ্রিদি পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা ক্রিকেট তারকাদের তালিকায় নিজের নাম তুলে দিয়েছেন। ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডও আফ্রিদির দখলে।