১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরীকে আসামিপক্ষের জেরা অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেন আসামি এনএসআইয়ের মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খানের আইনজীবী মো. সাহাব উদ্দিন ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর আইনজীবী মনজুর আহমেদ আনসারী।
জেরায় আটক হওয়া অবৈধ অস্ত্র পরিবহনকারী জাহাজ বঙ্গবোরাক চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে কত দিন ছিল, তা তদন্ত করা হয়েছে কি না, জানতে চান আকবর হোসেনের আইনজীবী।
জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বঙ্গবোরাক বহির্নোঙরে কত দিন অবস্থান করেছিল, তা প্রয়োজনীয় বিষয় ছিল না, তাই তদন্ত করিনি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে মনিরুজ্জামান বলেন, ‘তদন্তকালে অস্ত্র পরিবহনের জন্য ট্রাক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান গ্রিনওয়েজ ট্রান্সপোর্টের কার্যালয়ে গিয়েছি। সেখানে ট্রাক ভাড়ার চালান ও রসিদ পাওয়া যায়নি বলে জব্দ করতে পারিনি।’
সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর আইনজীবীর জেরার জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ইমামুজ্জামানের কাছ থেকে জোর করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি আদায়ের অভিযোগ সঠিক নয়। ইমামুজ্জামান স্বপ্রণোদিত হয়ে ১০ ট্রাক অস্ত্রের ব্যাপারে আমাকে তথ্য দেন। পরে তাঁর বক্তব্য নথিভুক্ত করতে আদালতের কাছে আমি আবেদন করি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে মনিরুজ্জামান আদালতে বলেন, ‘শিল্প মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব এবং এই মামলার পলাতক আসামি নূরুল আমিনের চট্টগ্রাম সফরের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব শোয়েব আহমেদের অনুমোদন ছিল কি না, তা মামলার বিষয়ের মধ্যে পড়ে না। তাই এ ব্যাপারে তদন্ত করিনি এবং এ-সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র জব্দ করা হয়নি।’
সাবেক অতিরিক্ত সচিব নূরুল আমিনের চট্টগ্রাম সফর এবং সার কারখানা সিইউএফএলের রেস্ট হাউসে অবস্থানের বিষয়ে সরকারি অনুমোদনের ফাইল তলব করতে আদালতে লিখিত আবেদন জানান নিজামীর আইনজীবী। আদালত এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি।
জেরায় নিজামীর আইনজীবী বলেন, আসামি করার ভয় দেখিয়ে মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে শোয়েব আহমেদ ও ইমামুজ্জামানকে বাধ্য করা হয়েছে। জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি সত্য নয়।
গতকাল পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তাকে ১২ দিন জেরা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত জেরা মুলতবি করেছেন বিচারক এস এম মুজিবুর রহমান।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে সিইউএফএল জেটিঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালানটি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র ও চোরাচালান আইনে পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ।