‘পত্রিকায় নিউজ করে কোনো লাভ নেই। আমার কাজ আমি করমুই। আপনাগো মতো সাংবাদিকদের ভর্তির তদবিরও করি। আপনার কিছু লাগলে বিকেলে দেখা কইরেন। এহন লন চা খাই।’
পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ভর্তিতে অনিয়ম হচ্ছে। এই অনিয়মের ব্যাপারে জানতে চাইলে আজ রোববার দুপুরে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মামুন-উর-রশিদ এই প্রতিবেদককে এসব কথা বলেন।
কলেজ সূত্রে জানায়, এ বছর কবি নজরুল সরকারি কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষে এক হাজার ১৭০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৩৫০, ব্যবসায় শিক্ষায় ৪৫০ ও মানবিকে ৩৭০ জন। এসব আসনে ভর্তিতে বোর্ডের মেধা তালিকা অনুযায়ী প্রথম দফা ভর্তি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন চলছে মেধাতালিকায় অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের ভর্তির কার্যক্রম। এ সুযোগে কলেজ প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ভর্তি-বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কলেজের কয়েকজন শিক্ষক প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, কলেজ প্রশাসনের সহযোগিতায় শাখা ছাত্রলীগ প্রতিবছরই ভর্তি-বাণিজ্য করছে। ভর্তিসংশ্লিষ্ট যে শিক্ষকেরা আছেন, তাঁরাও ছাত্রলীগের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন। কোনো শিক্ষক প্রতিবাদ করলে তাঁকেও হুমকি দেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজের বাইরে অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে টাকা লেনদেনের মধ্যস্থতা করছেন ছাত্রলীগের একাধিক কর্মী। যাঁদের সঙ্গে টাকায় বনিবনা হয়, তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মামুনের কাছে। মামুন টাকা পেয়ে অনুমতি দিলেই ভর্তির ফরম হাতে পাওয়া যায়।
ভর্তি হতে আসা এক শিক্ষার্থী প্রথম আলো ডটকমকে বলে, ‘ওয়েটিং লিস্টে সিরিয়াল পেছনে থাকায় বড় ভাইরা ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন। আজ ভর্তি করানোর কথা রয়েছে।’
কলেজ শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী জানান, অপেক্ষমাণ থাকা প্রায় সাড়ে ৪০০ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রত্যেকের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আর এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কলেজের উপাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, নিয়ম মেনেই ভর্তির কাজ চলছে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে কে ভর্তি-বাণিজ্য করছে, তা তিনি জানেন না।