‘ফেবারিট’ তকমার সুবিধা আছে। আবার অসুবিধাও আছে। সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই সম্ভবত বেশি। এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ ফাইনালের আগে কেউ নিজেদের ফেবারিট দাবি করতে চায় না। খামোখা চাপের বস্তা পিঠে চাপানোর দরকার কী! এ কারণেই কিনা আজ রাতের কনফেডারেশনস কাপের ফাইনালের আগে ব্রাজিল-স্পেন দুদলই একে অন্যের পিঠ চাপড়ে দিতেই ব্যস্ত। নেইমার তো সোজাসুজিই বলেছেন, তাঁর ফেবারিট স্পেন। ফাইনালের টিকিট পাওয়ার পরই স্পেন কোচ ভিসেন্তে দেল বস্ক ব্রাজিলকে ফেবারিট বলার হয়তো ‘পাল্টা’ উত্তর দিলেন নেইমার।
‘স্পেন এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা দল। ফাইনালে তারাই ফেবারিট’—বলেছেন নেইমার। স্পেনকে ফেবারিটের তকমা দিলেও ব্রাজিলীয়রা যে স্প্যানিশদের কোনো ধরনের ছাড় দেবে না, সেটাও উল্লেখ করেছেন বার্সা ফরোয়ার্ড, ‘প্রতিপক্ষকে সম্মান করেই নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে হবে আমাদের। ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সুযোগও দেওয়া হবে না ওদের।’
কনফেডারেশনস কাপে এ পর্যন্ত দুর্দান্ত খেলছেন নেইমার। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের প্রতিটিতেই গোল করেছেন। প্রতিটি ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছেন। সেমিফাইনালে অবশ্য গোলের দেখা পাননি। তবে দলের জয়ের নেপথ্যের নায়ক ছিলেন তিনিই। উরুগুয়ের বিপক্ষে ওই ম্যাচে দলের দুই গোলের দুটিতেই অবদান ছিল তাঁর। এই ব্রাজিল যে ‘নেইমার-নির্ভর’, এ নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই।
তবে ব্রাজিল শুধু একজনের ওপর ভর করে ফাইনালের বৈতরণী পার হবে বলে মনে করেন না ইকার ক্যাসিয়াস। স্পেন অধিনায়ক তাই সতীর্থদের সাবধান করে দিয়েছেন এই বলে, পুরো মনোযোগ নেইমারের ওপর দিয়ে অন্যদের ফাঁকা মাঠে গোল করার সুযোগ যেন না দেওয়া হয়, ‘নেইমার দুর্দান্ত খেলোয়াড়। তবে ব্রাজিল দলে আরও অনেক দুর্দান্ত খেলোয়াড় রয়েছে। আমাদের শুধু নেইমারকে নিয়ে ভাবলে চলবে না।’
গ্রুপ পর্বের পারফরম্যান্সে দুই দলই ছিল সমানে সমান। ব্রাজিল ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন। ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন স্পেন। অপেক্ষা এখন দুই গ্রুপ চ্যাম্পিয়নের রোমাঞ্চকর ফাইনালের। ক্যাসিয়াসও স্বীকার করেছেন, এটা ‘স্বপ্নের’ ফাইনাল।
কোন দল জিতবে শিরোপা? ব্রাজিল কি পারবে টানা তৃতীয় কনফেডারেশনস কাপ শিরোপা ঘরে তুলতে? না কি প্রথমবারের মতো মহাদেশীয় শিরোপার স্বাদ পাবে ইউরো ও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেন? আজ বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত চারটায় অনুষ্ঠেয় ম্যাচে সব প্রশ্নের সমাধান মিলবে।
ফাইনালে কোন দল ফেবারিট, বলা কঠিন। কারণ গত কয়েক বছর ধরেই স্পেন অপ্রতিরোধ্য। স্প্যানিশদের মুখোমুখি হওয়া মানেই এখন বাঘের মুখে পা দেওয়া। কম নয় ব্রাজিলও। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ঘরের মাঠে এক রকম অজেয়ই। গত ৫০ বছরে নিজেদের মাঠে একটাই প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে হেরেছে ব্রাজিল, সেটিও ৩৮ বছর আগে। মহারণের আগে দুই দল একে অপরের গায়ে ফেবারিটের তকমা লাগিয়ে দিচ্ছে। এটা অবশ্যই প্রতিপক্ষের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশের নিদর্শন। একই সঙ্গে তা চাপ কমানোর কৌশলও।