চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জয়নাল আবেদিন এবং হাবিলদার মো.শাহআলমকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজের হেফাজতে নিয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার।
দু’জনের বিরুদ্ধে স্বর্ণের বারের চালানসহ দু’ব্যবসায়ীকে আটকের পর অর্থ আদায় এবং সেই চালানের বেশ কয়েক পিস বার বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, ‘দু’জনের বিরুদ্ধে যেহেতু কিছু অভিযোগ পেয়েছি, তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আমার হেফাজতে এনেছি। এটি সম্পূর্ণ বিভাগীয় তদন্তের অংশ। সাময়িকভাবে থানা থেকে তাদের দায়িত্ব প্রত্যাহার করা হয়েছে, কিন্তু কোনভাবেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নয়। তদন্তের আগে কোনভাবেই আমরা তাদের দোষী বলতে পারবনা।’
পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার গভীর রাতে অবৈধ স্বর্ণের বারের একটি চালানসহ নগরীর হাজারী লেইনের দু’জন স্বর্ণ ব্যবসায়ী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ এলাকায় পুলিশের হাতে আটক হন। তারা এসময় একটি প্রাইভেট কারে চড়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন। এরা হলেন বিধান ধর ও বিদ্যাসাগর ধর।
অভিযোগ উঠেছে, রাতভর জোরারগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়িতে তাদের আটকে রেখে এএসআই জয়নাল আবেদিন এবং হাবিলদার মুন্সি শাহআলম তাদের কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা আদায় করে। এসময় স্বর্ণের বারের চালান থেকে ১৭টি বার বিক্রি করে দিয়ে ব্যবসায়ীরা ২০ লক্ষ টাকা দিতে বাধ্য হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার সকালে দু’ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয়ার পর তারা ঢাকা না গিয়ে নগরীতে ফিরে আসার পথে নগরীর আকবর শাহ থানার কাট্টলী এলাকায় নগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হন। পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, মিরসরাইয়ের জোররগঞ্জ এলাকায় পুলিশ তাদের আটক করে অর্থ আদায় করেছে। তবে তারা স্বর্ণের বার তাদের কাছে শুধুমাত্র ১০টিই ছিল বলে দাবি করেছেন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) ফরিদ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আটক স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা নিজেরাই অভিযোগ করেছে, তাদের আটক করে টাকাপয়সা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এ অভিযোগের বিষয়ে আমরা এএসআই, হাবিলদার, স্থানীয় জনসাধারণ অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তবে এখনও কোন সত্যতা পাইনি।’
এদিকে অভিযোগ উঠার পর বুধবার ভোরে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে একটি টিম জোরারগঞ্জ থানায় গিয়ে এএসআই জয়নাল আবেদিন ও হাবিলদার শাহআলমকে ধরে নগরীতে জেলা পুলিশ লাইনে নিয়ে আসেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা পুলিশ লাইনে থাকবেন বলে জানান পুলিশ সুপার।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, ‘অভিযোগ যেটা উঠেছে সেটার সুরাহা হতে হবে। একজন, দু’জনের জন্য পুরো পুলিশ বাহিনীর বদনাম হোক, সেটা আমি চাইনা।’