আগামীদিনে সংসদ নির্বাচন নিয়ে নতুন মেরুকরণের চেস্টা চলছে। কথা হবে মুখোমুখি সিংগাপুরে। দেশে নয়, কারণ একজন ক্ষমতাসীন জোটের নেতা এবং অন্যজন বিরোধী দলের প্রধান। আমি বলছি হুসাইন মোহম্মদ এরশাদ ও খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে। গত সপ্তাহে এরশাদ সিংগাপুর গেছেন, সাথে তার প্রথম স্ত্রী রওশন এরশাদ। বিগত সংসদ নির্বাচন হওয়ার কালে জাতীয় পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারপার্সন রওশন এরশাদ চেয়েছিলেন বিএনপির সাথে জোট করে জাপা নির্বাচনে যাক। কিন্তু এরশাদ তখন দলের অন্যদের চাপে জোট করেন আওয়ামী লীগের সাথে। ফলে জাতীয় পার্টির বিএনপি বলয়ের বলে পরিচিত রওশন এরশাদ ও কাজী জাফরের উদ্যোগ সে সময় সফল হয়নি। এছাড়া প্রেসিডেন্ট বিচারপতি ছাত্তারের বিএনপি সরকারকে হটিয়ে ২৪শে মার্চ ১৯৮১ সালে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখল করায় খালেদা এরশাদকে এতদিন শত্রুই মনে করতেন।
কিন্তু সুবিধার রাজনীতিতে চির শত্রু বলে কিছু নেই। এদের নীতি হলো ক্ষমতা দখল। এদের আদর্শ হলো যেনতেন ভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল ও দেশ শাসনের নামে ব্যক্তি,পরিবার, দল বা গোষ্ঠীর লুটপাটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। তাই ব্যারিষ্টার মওদুদ ও এডভোকেট মাহবুবুর রহমান সাহেবদের মত নেতারা যখন যেথা সুবিধা তখন সেথা রাজনীতি করেন। তাই বিএনপি হটানোর নায়ক এরশাদ এখন বিএনপির বন্ধু। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি দেশে বৈঠক করলে এবং ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিলে ক্ষমতাসীন মহাজোট থেকে এরশাদের জাপাকে বের হয়ে আসতে হয়। তখন আর আওয়ামী ব্লকেএরশাদের ঠাঁই হতো না। এমনিতেই বাম ঘরনার রাজনৈতিক দলগুলো কখনোই চায়নি মহাজোটে জাতীয় পার্টি থাকুক। শুধু ভোটে জেতার জন্যই আওয়ামী লীগ এরশাদের জাপাকে সাথে নেয় বিগত সংসদ নির্বাচনে।
আর এরশাদ মহাজোটে আসেন বিএনপির হাত থেকে বাঁচতে। মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর এরশাদ ভেবেছিলেন শেখ হাসিনা তাকে গুরুত্ব দেবেন। কিন্তু বিধি বাম, ঐ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিশাল বিজয় এরশাদকে গুরুত্বহীন করে ফেলে। তখন শেখ হাসিনা দুই বামদলের দুই বিশাল নেতা হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেননকেও দলের সিনিয়র নেতা আব্দুর রাজ্জাক,আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহম্মেদ,আব্দুল জলিল, আতাউর রহমান কায়সার , আকতারুজ্জান বাবু ,সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ অনেককে মন্ত্রী সভায় নেননি। বরং অপেক্ষাকৃত তরুনদের নিয়ে মন্ত্রীসভা গঠণ করেন। যাদের সালাম দিতে হয় তাদের অধীনে রেখে কাজ করা কঠিন, আর অতীতেও আওযামী রাজনীতিতে মুরুব্বীদের হটিযে তরুনরা এভাবেই এগিয়ে এসেছে। শুধু এদেশে আওয়ামী লীগ কেন সারা বিশ্বে অন্যদের ইতিহাসও এই রকমই। তাই মহাজোটে থেকে এরশাদ শুধু ক্ষমতার বড় বা বেশী ভাগ পেতে সিংগাপুরে যেয়ে এখন খালেদার অপেক্ষায় রয়েছেন।
চিকিৎসার প্রয়োজনে বা নামে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া। আজ রোববার রাত পৌনে ১১টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকা ছাড়বেন। বিরোধী দলীয় নেতার একান্ত সচিব সালেহ আহমেদ এবার সফরসঙ্গী হচ্ছেন বলে জানিয়েছে সংশি�ষ্ট সূত্র। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে পায়ের সমস্যাসহ বেশ কিছু রোগে ভূগছেন। এসবের চিকিৎসার জন্য তিনি সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন।