শনিবার বাংলাদেশের চারটি বিভাগীয় নগরীতে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এরইমধ্যে নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন আফিস থেকে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৬৪২টি কেন্দ্রে ব্যালট বাক্সসহ ভোটের সরঞ্জাম পৌঁছে দেয়া হয়েছে। নিয়োগ করা হয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারি, আনসার, পুলিশ, এপিবিএন, র্যাব এবং বিজিবি সদস্য। এছাড়া, মাঠে থাকছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে, বিরোধী প্রার্থীদের দাবি আনুযায়ী নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হয়নি।
এদিকে, গতরাত ১২টায় চার সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। আগামীকাল (শনিবার) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। চার সিটি কর্পোরেশনে ১২ লাখেরও বেশি ভোটার ভোট দেবেন। এবার প্রতিটি সিটির একটি ওয়ার্ডে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোটগ্রহণ করা হবে।
জাতীয় নির্বাচনের ছয় মাস বাকি থাকতে চার সিটি কর্পোরেশনের এই নির্বাচন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধীদল বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের জন্য একটা মার্যাদার লড়াই হিসেবে দেখা দিয়েছে। নির্বচনকে ঘিরে স্থানীয় জনগণ ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও দারুন উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে সর্বশেষ খবর জানার জন্য পক্ষ থেকে আমরা কথা বলেছি চার মহানগরের চারজন সাংবাদিকের সঙ্গে। তারা জানিয়েছেন, এবারের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে প্রত্যাবর্তন ও পরিবর্তনের প্রশ্নে।
গত মেয়াদে চার সিটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থকরাই মেয়র পদে বহাল ছিলেন এবং তারাই আবার ক্ষমতায় থাকতে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। আর তাদের প্রতিপক্ষরা চাইছেন পরিবর্তন।
চার সিটি করপোরেশন এলাকায় ভোটের দিন বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জোটের শীর্ষ পর্যায় থেকে।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আজ এক আনুষ্ঠানে বলেছেন, বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয় সুনিশ্চিত জেনে সরকার-সমর্থকরা কারচুপির চেষ্টা করতে পারে।
এর আগে, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা থেকে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফল ছিনতাই করা হলে দেশে অগুন জ্বলে যাবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, এ নির্বাচন ক্ষমতাসীন দলের জন্য একটা বড় আগ্নিপরীক্ষা। যদি তারা সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারে তাহলে তাদের পক্ষে বলা সহজ হবে যে, “দলীয় সরকারের অধীনেও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়।” সেক্ষেত্রে ফলাফল তাদের বিপক্ষে যেতে পারে।
আর ফলাফল পক্ষে রাখতে গেলে দুর্নীতির প্রশ্ন এসে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে রয়েছে এবং বিরোধীদের নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আরো জোরালো হবে।