সিসিক নির্বাচন: শেষ বেলায় ‘ম্যান টু ম্যান’ প্রচারণা

0
150
Print Friendly, PDF & Email

নির্বাচনী প্রচারণার সময় শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই। এরপর থেকে নেই কোনো মাইকের আওয়াজ, প্রার্থীদের পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ভোট ভিক্ষা চাওয়া বা দলবল নিয়ে মিছিল করা।

কিন্তু, যে নির্বাচন নিয়ে সিলেটের হাটবাজার, চায়ের দোকান, পাড়া-মহল্লা সরব, তার প্রচারণা কি শেষ হয়! নির্বাচনের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এখন চলছে ‘ম্যান টু ম্যান’ প্রচারণা। প্রিয় প্রার্থীর জন্য কর্মী-সমর্থকেরা ভোট চাইছেন একজন আরেকজনের কাছে।

শুক্রবার বিকেলে সিলেট শহরের মেডিকেল কলেজ রোডের একটি চায়ের দোকানে বসলেই সেখানে চা-বিক্রেতার এক পরিচিত ক্রেতা আসেন। ক্রেতা হাবিবুর রহমানের কাছে মেয়র পদে প্রিয় প্রার্থী কামরানের জন্য ভোট চাইলেন চা-বিক্রেতা।

আবার জিন্দাবাজার এলাকায় পাকশি রেস্তোরাঁয় আসা পৌঢ় দুই বন্ধুও একে অপরকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন, নিজ প্রার্থীর পক্ষে টেনে নিতে।

রেস্তোরাঁয় খেতে আসা তরুণ তার পূর্বপরিচিত কর্মচারীর কাছে আবেদন জানান, প্রিয় প্রার্থী আরিফুল হককে ভোট দিতে। তবে হাসতে হাসতে কর্মচারী জানান, ছালাহ উদ্দিন রিমনকে ভোট দেবেন তিনি! রিমন পাঁচবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েও অকৃতকার্য হয়েছেন। এ মেয়র প্রার্থীর পোস্টারেও কোনো প্রচারণা নেই।

এ ভাবেই চলছে নগরে ‘ম্যান টু ম্যান’ নির্বাচনী প্রচারণা। এ প্রচারণায় বাধা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, ঘনিষ্ঠজনরাই একে অপরকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন, হাসি-তামাশা বা অন্য কোনো কৌশলে।

তবে এর আগে শুক্রবার সকালে নির্বাচন দিনের কৌশল নিয়ে সিলেটের দুই মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহম্মদ কামরান ও আরিফুল হক চৌধুরী নিজ নিজ ঘনিষ্ঠজনদের নিয়ে একান্তে বৈঠক করেছেন। নিজ নিজ বাসায় সকালেই এ বৈঠক করেন তারা। তবে বৈঠকের বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তা ছিল দুই প্রার্থীরই। দুই প্রার্থী দিনের বেশির ভাগ সময় নিজ বাসায় কাটাচ্ছেন। নিজ পাড়ার মসজিদেই তারা জুমার নামাজ আদায় করেছেন।

নামাজের পরে এলাকাবাসী মুসল্লিদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন তারা এবং দোয়া প্রার্থনা করেছেন বলে জানিয়েছেন এলাকার মুসল্লিরা।

সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, সিলেট সিটি কর্পোরেশনে এবার মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯১ হাজার ৪৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫৭ হাজার ১৮১ ও নারী ভোটর ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৬৫।

সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের এসব ভোটার ১২৭টি কেন্দ্রের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, এবার ভোট বেড়েছে প্রায় ৩৪ হাজার। গত নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮০।

নির্বাচন কমিশন অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, ১২৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের জন্য ৯১৫টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। আর প্রতিটি বুথে থাকবেন একজন করে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার। পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন ১ হাজার ৭৯২ জন। প্রতিটি বুথে প্রার্থীদের একজন করে এজেন্ট দায়িত্ব পালন করবেন।

এদিকে, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত দেখা গেছে, বিভিন্ন কেন্দ্রে নির্বাচন সামগ্রী পাঠানো অব্যাহত আছে। সন্ধ্যার মধ্যে সব কেন্দ্রে নির্বাচন সামগ্রী চলে যাবে বলে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।

শেয়ার করুন