অভাব অনটন আর দারিদ্রতা পিছু ছাড়তে চায় না গরিব ঘরে। জীবন পরিচালনার ক্ষেত্র গরিবের হাতিয়ার শুধু দুটি হাত আর সততা। আর সেই সততা আর পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে সফল হতে চলেছেন চট্টগ্রামের কিছু সংখ্যাক কৃষক।
জমি লিজ নিয়ে আখ চাষ করে শুরু করেন পরিবর্তনের পালা। আর স্বপ্ন দেখছেন লখোপতি হওয়ার।
এক কৃষক কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ঋণ নিয়ে নিজের অনুপ্রেরণাকে কাজে লাগিয়ে পরিকল্পনা করেন আখ চাষের। সেই পরিকল্পনা আজ তাকে সফলতার দাঁড়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
আখের বীজ অল্পপানিতে ভিজিয়ে উপরে বন দিয়ে সাত দিন ঢেকে রাখার পর গজায় অঙ্কুুর। সেই থেকে শুরু হয় স্বপ্ন। লিজ নেয়া মাত্র ৩০ শতাংশ জমিতে ভালোভাবে চাষ দিয়ে বীজ বপন করেন।
বাংলা মাসের আশ্বিন মাসে জমিতে আখ রোপন করা হয়। আর শ্র্রাবন ভাদ্র মাসে আখ তোলা হয়। পরিশ্র্রমের সফলতা আসতে শুরু করে ধীরে ধীরে। মাত্র ক’দিনের ব্যবধানে বেড়ে উঠে আখ।
সৃষ্টি হয় এক মনোরম পরিবেশের। আর ছোট্ট স্বপ্ন রূপ নেয় বিশালতায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে খরচ বাদ দিয়ে লক্ষাধিক টাকা আয় হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
কেবল গুড় ও চিনি উৎপাদনই নয়, রসালো আখ হাটবাজারে খুচরা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন অনেকে। স্থানীয় ভাষায় ২৭ জাতের আখ শক্ত হওয়ায় তা দিয়ে চিনি তৈরি করা হয়।
আর মেশিনের মাধ্যমে রস তৈরি ও মুখে খাওয়ার জন্য নরম তুলাভুড়ি বা চুইং জাতের আখ হাটবাজারে বিক্রি হয়। আর অন্যান্য জাতের আখ মাড়াই করে গুড় তৈরি করা হয়।
কৃষকরা জানান, চুইং বা তুলাভুড়ি আখ দেখতে হলদে রংয়ের। নরম ও রসালো হওয়ায় এ অঞ্চলে এর চাহিদা ব্যাপক। আর ২৭ জাতের আখ দেখতে লাল- খয়েরি ও ৬-৭ ফুট লম্বা এবং শক্ত।
আখ চাষীর ৩০ শতাংশ জমিতে আখ চাষে এ পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। সঠিকভাবে পরিচর্যা করায় আখের রোগবালাই নেই বললেই চলে। অনেকটা প্রাকৃতিকভাবেই পুষ্ট হয়ে বেড়ে ওঠেছে আখগুলো।
এ ব্যাপারে কৃষি অফিসের সহযোগিতা, সার, কীটনাশক, বীজ সংরক্ষণ ও দিকনির্দেশনা পেলে আগামীতে ব্যাপকভাবে আখ চাষ করব।
উপজেলা কৃষি সমপ্রারণ কর্মকতারা জানান, উপজেলায় আখের চাষ তেমন ভাবে হয়না। তবে এ মৌসুমে বিক্ষিপ্তভাবে উপজেলায় ১১ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। এটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল।
কোন কৃষক আখ চাষ করতে আগ্রহী হলে কৃষি বিভাগ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা দেওয়া হবে।