অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন দুটোই আগামী অর্থবছরের বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। এ ছাড়া বর্তমান সরকারের শেষ বাজেট হওয়ায় এটি স্বাভাবিকভাবেই উচ্চাভিলাষী—এমন মন্তব্যও করেছে চেম্বার।
আগামী ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা জানায় এমসিসিআই। এতে আরও বলা হয়েছে, বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বাস্তবায়নই হলো এ প্রবৃদ্ধি অর্জনের চাবিকাঠি।
কৃষিতে বরাদ্দ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে চেম্বারটি বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, এ খাতে মাত্র তিন হাজার ৭২১ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে কৃষি খাতে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে। তবে খাতটিতে চলমান ভর্তুকি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করছে সংগঠনটি।
এমসিসিআই সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, সরকারের ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের উচ্চমাত্রার সীমা অবশ্যই ২৫ হাজার ৯৯০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। যদি এ সীমা অতিক্রম করে তবে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করবে। তা ছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তারল্যসংকট সৃষ্টি করবে।
তাই সরকারকে অর্থের বিকল্প উৎস খোঁজার সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে চেম্বার। এ ছাড়া বাজেটে জিডিপি, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বিনিয়োগের হার বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকারকে প্রচেষ্টা চালাতে হবে বলে মন্তব্য করেছে ব্যবসায়ী সংগঠনটি।
ভৌত ও সামাজিক খাতের উন্নয়নের প্রতি লক্ষ রেখে প্রস্তাবিত বাজেট দেশের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাবে এবং অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বলে মনে করে এমসিসিআই। একই সঙ্গে যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, পল্লী অর্থনীতি, শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, স্থানীয় সরকার এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বেশি বরাদ্দ দেওয়ার প্রশংসা করেছে চেম্বার।
চেম্বারের নেতারা মনে করেন, জ্বালানি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতে সরকারের বাস্তবায়ন সক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়া বছরের লক্ষ্য অর্জনের জন্য কোনো বিকল্প নেই। তা ছাড়া জাতীয় কয়লানীতি অবিলম্বে ঘোষণা করে যথাযথ মাইনিং পদ্ধতি গ্রহণ করে দেশে মজুতকৃত সম্পদের ব্যবহার করা উচিত।
এদিকে শিল্প খাতের কর অবকাশ-সুবিধা ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে এমসিসিআই। তবে বিদ্যুৎ খাতের জন্য প্রযোজ্য আর্থিক সুবিধা চলতি বছরের জুনের পর বাড়ানোর কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। মেট্রোপলিটন চেম্বার আরও বলেছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পরও বিভিন্ন কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিলম্ব ঘটে বলে বাজেটে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সংগঠনটি মনে করে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব বাধা দূর করা প্রয়োজন। বিশেষ করে বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় ভূমির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা।