মহাজোট সরকারের শেষ বাজেট। সব ঠিক ঠাক থাকলে ২০১৪ সালে নতুন সরকার গঠিত হবে। ভোটের রাজনীতিতে কে ক্ষমতায় আসবে কেউ জানে না। তবে যেই দেশ শাসনের দায়িত্ব পান অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেবেন না আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি নিজেই এটি কয়েকবার স্বীকার করেছেন। বলেছেন প্রকাশ্যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেও তিনি আর মন্ত্রী হবেন না।
অর্থনীতি ২০১২ সালে যখন টালমাটাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তিনি সমালোচনার মধ্যে পড়ে যান। এক পর্যায়ে পদত্যাগের প্রশ্নও ওঠে। তবে নাকচ করে দেন পদত্যাগের বিষয়টি। কিন্তু সাংবাদিকদের একাধিকবার বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আসলেও তিনি আর মন্ত্রী হবে না। তাই সম্ভবত, এটিই তার জীবনের শেষ বাজেট।
জানা গেছে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ইতোপূর্বে ৪১টি বাজেট দিয়েছেন বিভিন্ন সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও উপদেষ্টারা। এর মধ্যে ১২ বার বাজেট দিয়েছেন বিএনপির হয়ে অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। তবে এ দৌঁড়ে তার পরে সপ্তম বারের মতো বাজেট দিয়ে দ্বিতীয় রেকর্ড গড়লেন আবুল মাল আবদুল মুহিত।
তার জীবন বৃত্তান্ত থেকে জানা গেছে, অর্থনীতিতে না পড়লেও পেশাগত যোগ্যতার কারণে তিনি স্বীকৃতি পেয়েছেন একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে। পড়াশোনা করেছেন ইংরেজি সাহিত্যে।
জানা গেছে, ১৯৮২-৮৩ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো বাজেট দেন মুহিত। এর পরের বার ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরের বাজেট দেন দ্বিতীয়বারের মতো। প্রথম দু’বার অবশ্য আবুল মাল আব্দুল মুহিত ছিলেন এরশাদ সরকারের অর্থমন্ত্রী।
আর ২০০৯-১০ মহাজোট সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে বর্তমান সরকারের প্রথম বাজেট দেন। আর ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেট হিসেবে ৭ম বারের মতো সংসদে বাজেট নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
সফলতা-ব্যর্থতার বিশ্লেষণে হয়তো তাল মেলালো যাবে না। কিন্তু সরকারের মেয়াদে নানা কথা বলেই সমালোচিত হয়েছেন তিনি। এই অর্থমন্ত্রী বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, পেশাগত জীবন শেষে বই লিখে সময় পার করবেন।
এ ব্যাপারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়াগলগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্ট্রাচার্য বলেন, গত সাড়ে চার বছরের যেসব নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে সরকারকে মানুষ মনে রাখবে, তার মধ্যে গ্রামীণব্যাংক নিয়ে বির্তক, পুঁজিবাজারের ধস, হলমার্ক কেলেংকারি, বিসমিল্লাহ গ্রুপের ঋণ জালিয়াতি, ডেসটিনিকে স্বচ্ছভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা, দুর্নীতির কারণে পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বাতিল, ট্রানজিট মাশুল নিয়ে বির্তক।