জনগণের মুখোমুখি হয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের ৩ মেয়র পদপ্রার্থী। ‘জনগণের মুখোমুখি’ নামের এক অনুষ্ঠানে তাদের কাছে পেশ করা হয় ২৩ দফা দাবি। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি।
এতে জাতীয়তাবাদী নাগরিক ফোরামের মেয়র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনি, সম্মিলিত নাগরিক কমিটির তালুকদার আব্দুল খালেক এবং খুলনা নাগরিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির শফিকুল ইসলাম মধু অংশগ্রহণ করেন। আসন্ন ১৫ জুনের নির্বাচনে এই তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
খুলনা বিভাগীয় প্রেসক্লাব ফেডারেশনের চেয়ারপার্সন ও দৈনিক পূর্বাঞ্চলের সম্পাদক আলহাজ লিয়াকত আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ-জামান।
এ সময় বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ মোশাররফ হোসেন মেয়র প্রার্থীদের কাছে সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে ২৩ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। এসব দাবির অন্যতমগুলো হচ্ছে- শহরের জলাবদ্ধতা নিরসণে ড্রেনেজ উন্নয়ন, অবৈধ খাল দখলমুক্ত করা, হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে নিজস্ব আয় বৃদ্ধি করে আয়ের নতুন খাত স্থাপন করা, কেসিসির নিজস্ব অর্থায়নে ও তত্ত্বাবধানে মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও সিটি রেড ক্রিসেন্টের উদ্যোগে আধুনিক হাসপাতাল ও ব্লাড ব্যাংক স্থাপন ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ষাটোর্ধ্ব নগরবাসীর জন্য বিশেষ সুবিধাসহ স্বতন্ত্র চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্তবায়ন, জিয়া হলকে আধুনিক করে পুণ:নির্মাণ, নগর পরিবহন চালু করা, মশক নিধন ব্যবস্থা উন্নতকরণ, আধুনিক পার্ক নির্মাণ, রূপসা সেতু থেকে রেলগেট পর্যন্ত নদীর তীর ঘেষে সড়কসহ রিভারভিউ পার্ক নির্মাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন ইত্যাদি।
মনিরুজ্জামান মনি জানান, উন্নয়ন কমিটির ২৩ দফাই শুধু নয়, বরং এর বাইরেও কোনো পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ থাকলে সেগুলো বাস্তবায়ন করে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে একটি আধুনিক খুলনা গড়তে তিনি বদ্ধপরিকর থাকবেন। একই সাথে কেসিসিকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে খুলনার সাংবাদিক সমাজকেও অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহবান জানান তিনি।
তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, “বিগত ২০০৮ সালের আগের খুলনা ও বর্তমান খুলনার মধ্যে এক বিরাট পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। আগামী নির্বাচনে খুলনাবাসী সে মূল্যায়ন করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, “শুধু খুলনা মহানগরীর উন্নয়নই নয়, পদ্মা সেতু নির্মাণসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন এবং কেডিএ-কেসিসির সমন্বয়ের মাধ্যমে খুলনাকে গড়ে তোলা হবে আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন নগরীতে।”
অনুষ্ঠানে নাগরিকদের পক্ষ থেকে শতাধিক নির্ধারিত প্রশ্ন করা হলেও লটারীর মাধ্যমে ৩৩টি প্রশ্নের উত্তর দেন তিন মেয়রপ্রার্থী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আলহাজ মোল্লা জালাল উদ্দিন এমপি, সংরক্ষিত আসনের এমপি নূর আফরোজা আলী, জেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ হারুনুর রশিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুল কাইউমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, নাগরিক নেতা, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
সবশেষে তিন মেয়রপ্রার্থী এসব দাবি বাস্তবায়নে হাত উঁচু করে নগরবাসীর কাছে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেন।