হুমকির মুখে পোশাকশিল্প, দায় নিচ্ছে না কেউ

0
122
Print Friendly, PDF & Email

পোশাকশিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ বাড়ছেই। কিন্তু কেন এই অসন্তোষ, তার সন্তোষজনক উত্তর নেই কারো কাছে। মালিক ও শ্রমিক পক্ষ থেকে একেক সময় দেওয়া হচ্ছে একেক রকম ব্যাখা। এর দায় নিতে চাচ্ছে না কোনো পক্ষই।

সর্বশেষ শনিবার আশুলিয়ার জামগড় এলাকার লিন্ডা ফ্যাশন লিমিটেডে শ্রমিক বিক্ষোভে জরুরি ভিত্তিতে ছুটি দেওয়া হয়। প্রতিদিনই সাভার, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়া এলাকার কোনো না কোনো পোশাক কারখানা শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে এভাবে সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুতকারী ও রপ্তানিকারকদের সমিতির (বিজিএমইএ) দাবি, খুব সাধারণ ইস্যু নিয়েও শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে। এটা পোশাক শিল্পের জন্য কখনোই সুখবর হতে পারে না। বহির্বিশ্বে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।  উন্নয়নশীল একটি দেশে এ ধরনের ঘটনা কখনো আশাব্যঞ্জক নয়।

অন্যদিকে, শ্রমিক সংগঠনগুলো থেকে আগের মতোই দাবি করা হচ্ছে, মালিকরা শ্রমিকদের অধিকার নানাভাবে খর্ব করছেন। আর তা যদি নাই হবে, তাহলে পরিস্থিতি এতোটা খারাপ হতো না।

এ নিয়ে উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ যেমন চলছে, তেমন বেড়ে চলেছে শ্রমিক অসন্তোষ। যার বহিঃপ্রকাশ দেখা যায় শ্রমিক ক্ষোভের মাধ্যমে।

এ বিষয়ে বিজিএমইএ সহ-সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ আজীম বলেন, “মালিকরা শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করছে না, এটি ঠিক না। শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য সরকার মজুরি বোর্ড করেছে। মজুরি বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা সে অনুযায়ীই কাজ করব।”

তিনি বলেন, “সরকার আমাদের যেভাবে বলছে আমরা সেভাবে কর্মকাণ্ড পরিচালনার চেষ্টা করছি। তাহলে অসন্তোষ কীভাবে মালিকরা বৃদ্ধি করছে।”
 
অন্যদিকে, শ্রমিকদের পক্ষে টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কারস ফেডারেশনের সভাপতি লাভলী ইয়াসমীন বলেন, “শ্রমিকদের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে যায়, তখনই তারা প্রতিবাদ করে, করে বিক্ষোভ। মালিকরা শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি ঠিকমতো পরিশোধ করে না। যেখানে বেতন-ভাতাদিরই কোনো ঠিক নেই অন্যান্য সুবিধার কথা বাদই দিলাম।”

তিনি আরও বলেন, মালিকরা যদি ঠিকমতো বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করতেন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেন, তাহলে এ ধরনের শ্রমিক বিক্ষোভ হতো না। শ্রমিকরা গরিব হলেও তো মানুষ।”
 
তাজরীন ও রানা প্লাজার ঘটনার পর প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও নানা কারণে পোশাক শিল্প কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ-ভাঙচুর করছে, যা চোখে পড়ার মতো।

বিক্ষোভের পর বিজিএমইএ থেকে ঘোষণা দিয়ে কারখানা বন্ধ রাখার ঘটনাও ঘটেছে কয়েক বার। পরে আবার কারখানা খুলে দেওয়া হয়।

২০০৬ সালের পর থেকে আশুলিয়া নারায়ণগঞ্জ এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বিশ্ব দরবারে অসংখ্য বার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

আর আশুলিয়া সাভার, নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকেই যেহেতু পোশাক রপ্তানির ২৫ ভাগ পণ্য আসে, সেহেতু এসব এলাকায় অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুরো পোশাক খাতেই।

শেয়ার করুন