সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিএনপি নেতারা বলেছেন, তারেক রহমানকে গ্রেফতার করে দেশে ফেরানোর ক্ষমতা ইন্টারপোলের নেই। তারা অভিযোগ করেন, তারেক রহমানকে নিয়ে সরকার ষড়যন্ত্র করছে।’তারেক গ্রেফতারের ক্ষমতা ইন্টারপোলের নেই’
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দর্শক সারিতে রয়েছেন দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া- ছবি সমকাল
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দর্শক সারিতে বসে বক্তব্য শোনেন।
সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “তারেক রহমানকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে,যাতে তিনি দেশ ফিরতে না পারেন। এ জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে,অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।”
তিনি বলেন,”ওয়ান-ইলেভেনের পর দেশের গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছিল। বিএনপি চেয়ারপার্সন কারাগারে থেকে নীরব সংগ্রামের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে এনেছিলেন।”
“ওয়ান-ইলেভেনের পর দেশের গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছিল। বিএনপি চেয়ারপার্সন কারাগারে থেকে নীরব সংগ্রামের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে এনেছিলেন।”
তার মতে,এখনও গণতন্ত্র হত্যার জন্য গলা টিপে ধরা হয়েছে। তাই সামনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে লড়াই হবে,তাতে অংশ নিতে হবে। সে লড়াইয়ে জিততে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, “১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। এবারও সরকার সভা-সমাবেশ বন্ধ করে দিয়ে গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরেছে। আমার দেশ পত্রিকাসহ দুটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল তারা বন্ধ করে দিয়েছে। অতীতের মতো একই কায়দায় আজ তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার চক্রান্ত্র করছে।”
ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে দেশের মানুষকে জেগে উঠতে হবে। আগামী নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীন দিতে গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বাধ্য করা হবে।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “সরকার এমন অপকর্ম করেছে যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে সাহস পাচ্ছে না। গায়ের জোরে ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে চায়।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, “তারেক রহমান সর্বোচ্চ আদালতের শর্তহীন জামিন নিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য গেছেন। তিনি কোনো শর্ত বা মুচলেকা দিয়ে যাননি। সুপ্রিম কোর্টের আদেশ না পড়ে মন্ত্রীরা নানা কথা বলছেন। ইন্টারপোলসহ কারও সাধ্য নেই,তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার। তারেক রহমান সুস্থ হয়ে স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে আসবেন। কেউ তাকে বাধা দিয়ে রাখতে পারবে না।”
সভাপতির বক্তব্যে দলের সহসভাপতি সাদেক হোসেন খোকা সরকারের উদ্দেশে বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধ করুন। নইলে এর পরিণতি শুভ হবে না।”
সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. ওসমান ফারুক, ফজলুল হক মিলন, যুবদল নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সভানেত্রী নুরী আরা সাফা, ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।
জিয়ার বর্ণাঢ্য জীবনীর ওপর আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক।
দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ: বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন। দুপুরে পুরান ঢাকার দয়াগঞ্জ, জুরাইন, যাত্রাবাড়ী ও শ্যামপুর এলাকায় খাবার বিতরণ করেন তিনি। রোববার এবং সোমবারেও কয়েকটি স্থানে খাবার বিতরণ করবেন খালেদা জিয়া।