নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থার দাবিতে আন্দোলনের পাশাপাশি আগামী দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে বিএনপি।৪০ আসনে আসছে নতুন মুখ
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ৩শ’ সংসদীয় আসনে দলের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ওপর একাধিক জরিপ চালাচ্ছে দলটি।
জরিপে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে শতাধিক আসনে বিগত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পাশাপাশি ‘জনপ্রিয়’ ও ‘যোগ্য’ নতুন মুখকে সম্ভাব্য বিকল্প প্রার্থী হিসেবে চিহ্নিত করছে দলটি।
এসব আসনে আরও জরিপসহ অন্যান্য মাধ্যমে ব্যাপক যাচাই-বাছাই করে কমপক্ষে ৪০টি আসনে তুলনামূলক ‘জনপ্রিয়’ ও ‘গ্রহণযোগ্য’ নতুন মুখকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।
এ ছাড়া শরিক ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের জন্য অর্ধশত আসন রেখে অবশিষ্ট প্রায় সব আসনেই নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত নেতাদের আবারও মনোনয়ন দেওয়া হবে। জরিপের সঙ্গে জড়িত এবং বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক নেতা সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সমকালকে বলেন, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচনকে ঘিরেই সব সময় সাংগঠনিক কার্যক্রম চলে। বর্তমানে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যেই তারা নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছেন। এ আন্দোলনও নির্বাচনের প্রস্তুতিরই অংশ।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু সমকালকে বলেন, বিএনপি বর্তমানে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনে আছে। তারপরও কমবেশি নির্বাচনের প্রস্তুতি থাকা উচিত। সে প্রস্তুতিটুকু নিতেই মাঠ পর্যায়ে কিছুটা খোঁজখবর নিতে হয়। এটি প্রতিটি নির্বাচনের আগে সব রাজনৈতিক দলই নিয়ে থাকে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রস্তুতিকে সামনে রেখে ভেতরে ভেতরে জরিপসহ নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপিও। দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্য থেকে ‘জনপ্রিয়তা’ ও ‘গ্রহণযোগ্যতা’র বিবেচনায় এগিয়ে থাকাদের নাম জরিপ রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। একইসঙ্গে জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য শক্তিশালী প্রার্থীদের সম্পর্কেও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি। দেশি ও বিদেশি দুটি বেসরকারি সংস্থাকে একান্ত গোপনে এ জরিপ কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
সূত্র জানায়, আসনভিত্তিক জরিপে নবম সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়নপ্রাপ্ত বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীদের এলাকায় বর্তমান অবস্থা কেমন তা তুলে ধরা হচ্ছে। এলাকায় দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের কাছে ওই নেতার গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে রিপোর্টে তুলে আনা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, দলের নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের দলের বর্তমান পদ-পদবির পাশাপাশি বিগত দিনের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডও জরিপ রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থী কে, এ পর্যন্ত ক’বার দলবদল করেছেন, সে বিষয়টিও জরিপে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে।
জরিপের ভিত্তিতেই জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার বিবেচনায় শীর্ষে থাকা তিন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম রিপোর্টের ওপরের দিকে থাকবে। তবে অন্য যেসব নেতা মনোনয়ন পেতে আগ্রহী বা আলোচনায় আছেন এমন নেতাদের নামও রিপোর্টে সন্নিবেশিত হবে। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগসহ প্রতিদ্বন্দ্বী দলের নেতাদের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের অবস্থা সম্পর্কে তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে জরিপে।
বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। দলের হাইকমান্ড যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন দেবে।
তবে বিএনপির অন্য এক নীতিনির্ধারক নেতা সমকালকে বলেন, রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে আপাতত জরিপ কার্যক্রম অত্যন্ত সঙ্গোপনে চলছে। নির্বাচনের আগে আরও একাধিক জরিপ চালানো হবে। শেষ জরিপ প্রতিবেদনের পর বিএনপির পার্লামেন্টারি বোর্ড চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই করে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তিনটি আসনে নির্বাচনে লড়বেন।এ ক্ষেত্রে বগুড়া-৬, ফেনী-১ এবং আরেকটি আসন দলীয় প্রয়োজন অনুযায়ী ঠিক হবে।এ ছাড়া দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও তিনটি আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বগুড়া-৭, ঢাকায় একটি এবং সিলেটে একটি আসনে নির্বাচন করতে পারেন তিনি।
বিএনপির জরিপে ৩০০ নির্বাচনী আসনের মধ্যে শতাধিক আসনে বিগত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পাশাপাশি সম্ভাব্য বিকল্প প্রার্থী হিসেবে নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্য থেকে কমপক্ষে ৪০ আসনে নতুন মুখ আগামী নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পাবেন। নিচে বিগত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পাশাপাশি নতুন সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম উল্লেখ করা হলো :
রংপুর বিভাগ : দিনাজপুর-২ শফিউল আলম প্রধানের আসনে নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশী মরহুম খুরশীদ জাহান হকের ছেলে শাহরিয়ার আক্তার হক ডন, নীলফামারী-৪ আমজাদ হোসেন সরকারের আসনে বেবী নাজনীন, রংপুর-৩ আবদুল কাইয়ুম মণ্ডলের আসনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোজাফফর হোসেন, ব্যবসায়ী কাওসার জামান বাবলা, রংপুর-৪ রহিমউদ্দিন ভরসার আসনে ড. শাহেদ কামাল পাটোয়ারী, রংপুর-৫ আসনে জামায়াতের হাফিজুর রহমানের আসনে বিএনপি নেতা শাহ সোলায়মান আলম,
কুড়িগ্রাম-২ ফের জাপায় ফিরে যাওয়া তাজুল ইসলাম চৌধুরীর আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ, কুড়িগ্রাম-৩ জামায়াতের মাওলানা মতিউর রহমানের আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি তাসভীরুল ইসলাম, গাইবান্ধা-২ শফিক-উর রহমানের আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি আনিসুজ্জামান খান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক গাউসুল আজম ডলার, সাবেক জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট হামিদুল হক সানা।
রাজশাহী বিভাগ : বগুড়া-৩ মো. শোকরানার আসনে নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি কাজী রফিক, উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল তৈয়ুব জাকির, বগুড়া-২ একেএম হাফিজুর রহমানের আসনে শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মীর শাহে আলম, বগুড়া-৫ জানে আলম খোকার আসনে গোলাম সিরাজ, রাজশাহী-১ এনামুল হকের আসনে ব্যারিস্টার আমিনুল হক, রাজশাহী-৩ কবির হোসেনের আসনে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট শাহীন শওকত, রাজশাহী-৪ মুহম্মদ আবদুল গফুরের আসনে সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা।
নাটোর-৩ কাজী গোলাম মোরশেদের আসনে পৌর মেয়র শামীম আল রাজী, নাটোর-৪ মোজাম্মেল হকের আসনে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুর স্ত্রী মহুয়া নূর কচি, অধ্যাপক একরামুল আলম, সিরাজগঞ্জ-৪ জামায়াতের রফিকুল ইসলাম খানের আসনে বিএনপির আকবর আলী খান, সিরাজগঞ্জ-৫ মেজর (অব.) মনজুর কাদেরের আসনে ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম, সিরাজগঞ্জ-৬ কামরুদ্দিন এহিয়া খান মজলিশের আসনে জাপা চেয়ারম্যান মরহুম ডা. এমএ মতিনের ছেলে ডা. এমএ মুহিত। পাবনা-১ আসনে কারাবন্দি জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর (দণ্ড হলে) আসনে তার পরিবারের সদস্য বা বিএনপি নেতা মেজর (অব.) মঞ্জুর কাদের, পাবনা-৩ সাইফুল আজমের আসনে তার ভাই এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) ফখরুল আজম, পাবনা-৪ সিরাজুল ইসলাম সরদারের আসনে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, পাবনা-৫ জামায়াতের আবুল বসর মোহাম্মদ আবদুস সুবহান মিয়ার আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস।
খুলনা বিভাগ : কুষ্টিয়া-১ আলতাব হোসেনের আসনে নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশী রেজা আহমেদ বাচ্চু, চুয়াডাঙ্গা-১ মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য শামসুজ্জামান দুদু, চুয়াডাঙ্গা-২ জামায়াতের হাবিবুর রহমানের আসনে বিএনপির হাসান খান বাবু, যশোর-১ আসনে জামায়াতের আজিজুর রহমানের আসনে সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত বিএনপির সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, যশোর-৫ জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের আসনে বিএনপির মো. শহিদুজ্জামান, মাগুরা-১ ইকবাল আখতার খানের আসনে বিএনপির জেলা সভাপতি কবির মুরাদ, খুলনা-৩ কাজী শাহ সেকেন্দার আলীর আসনে মহানগর বিএনপির কোষাধ্যক্ষ আরিফুর রহমান মিঠু, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, খুলনা-৪ শরীফ শাহ কামালের আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল (ঢাকায় মনোনয়ন না পেলে), খুলনা-৫ জামায়াতের মিয়া গোলাম পরওয়ারের আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি গাজী আবদুল হক।
বরিশাল বিভাগ: বরগুনা-১ মতিউর রহমান তালুকদারের আসনে নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফারুক মোল্লা, লে. কর্নেল (অব.) আবদুল খালেক, ভোলা-২ আসনে বিজেপির আশিকুর রহমানের আসনে সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহিম, বরিশাল-১ ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবহানের আসনে সাবেক এমপি জহিরউদ্দিন স্বপন, আকন্দ কুদ্দুস, বরিশাল-৩ সেলিমা রহমানের আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, ঝালকাঠি-১ রফিকুল ইসলাম জামালের আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, পিরোজপুর-১ কারাবন্দি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর (দণ্ডপ্রাপ্ত হলে) আসনে তার ছেলে শামীম বিন সাঈদী, জেলা বিএনপির সভাপতি গাজী নূরুজ্জামান বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, পিরোজপুর-২ নূরুল ইসলাম মঞ্জুরের আসনে তার ছেলে আহমেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন, শিল্পপতি ফখরুল ইসলাম, পিরোজপুর-৩ আসনে কর্নেল (অব.) শাহজাহান মিলনের আসনে সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত দলের সাবেক এমপি ডা. রুস্তম আলী ফরাজী।
ঢাকা বিভাগ: জামালপুর-১ শাহিদা আক্তার রিতার আসনে নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি রশিদুজ্জামান মিল্লাত, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ কাইয়ুম, জামালপুর-২ সুলতান মাহমুদ বাবুর আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ হালিম, জামালপুর-৫ সিরাজুল হকের আসনে মহিলা দলের কেন্দ্রীয় নেত্রী নিলুফার চৌধুরী মনি এমপি, সদর পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট ওয়ারেছ আলী মামুন, শেরপুর-১ কারাবন্দি জামায়াতের কামারুজ্জামানের (দণ্ডপ্রাপ্ত হলে) আসনে বিএনপির হযরত আলী, শেরপুর-২ মরহুম জাহেদ আলীর আসনে তার ছেলে ফাহিম চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সচিব ব্যারিস্টার হায়দার আলী ৪০ আসনে আসছে নতুন মুখ
শেরপুর-৩ মাহমুদুল হকের আসনে ঝিনাইগাতি উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা, ময়মনসিংহ-১ আফজাল এইচ খানের আসনে বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, ময়মনসিংহ-২ শাহ শহীদ সারওয়ারের আসনে জেলা (উ.) সাধারণ সম্পাদক মোতাহের হোসেন, ময়মনসিংহ-৩ এম ইকবাল হোসেইনের আসনে ফয়সাল আমীন খান, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট নজমুল হুদা,
ময়মনসিংহ-৪ একেএম মোশাররফ হোসেনের আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, দেলোয়ার হোসেন খান দুলু, বিএনপির দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু ওহাব আকন্দ, ময়মনসিংহ-৫ মোহাম্মদ জাকির হোসেনের আসনে একেএম মোশাররফ হোসেন, ময়মনসিংহ-৯ খুররম খান চৌধুরীর আসনে ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম, ময়মনসিংহ-১০ ফজলুর রহমান সুলতানের আসনে তার ভাই এবি সিদ্দিকুর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, নেত্রকোনা-২ আশরাফ আলী খান খসরুর আসনে ডা. আনোয়ারুল হক।
নেত্রকোনা-৩ রফিকুল ইসলাম হেলালীর আসনে সাবেক এমপি নূরুল আমিনের ছেলে রায়হান আমিন তালুকদার রচি, সৈয়দ আলমগীর খসরু, হায়দার আহমেদ খান, নেত্রকোনা-৪ লে. কর্নেল আতিকের আসনে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, নেত্রকোনা-৫ মোহাম্মদ আলীর আসনে দলের জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের তালুকদার, অ্যাডভোকেট আবদুল জলিল, কিশোরগঞ্জ-১ মাসুদ হিলালীর আসনে দলের সাবেক জেলা সাধারণ সম্পাদক ওয়ালী উল্লাহ রাব্বানী ও সাবেক বিশেষ জজ রেজাউল করিম চুন্নু।
মানিকগঞ্জ-১ মরহুম খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের আসনে তার ছেলে খন্দকার আকবর হোসেন বাবলু, মানিকগঞ্জ-২ আফরোজা খান রিতার আসনে মাইনুল ইসলাম শান্ত, মানিকগঞ্জ-৩ হারুনার রশিদ খান মুন্নুর আসনে তার মেয়ে আফরোজা খান রিতা, মুন্সীগঞ্জ-১ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মুন্সীগঞ্জ-৩ শামসুল ইসলামের (অসুস্থজনিত কারণে প্রার্থী না হলে) আসনে তার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই।
ঢাকা-২ মতিউর রহমানের আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা-৯ শিরিন সুলতানার আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ঢাকা-১২ খন্দকার মাহবুবউদ্দীন আহমাদের আসনে বিএনপির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসীম, ঢাকা-১৫ মরহুম উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খানের আসনে তার ছেলে মুরাদ হামিদ খান, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, যুবদল নেতা মামুন হাসান, ঢাকা-১৮ আজিজুল বারী হেলালের আসনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেজর (অব.) কামরুল ইসলাম, যুবদল উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাহাঙ্গীর।
গাজীপুর-১ চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর আসনে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক ছাইয়েদুল আলম বাবুল, গাজীপুর-৪ মোহাম্মদ আবদুল মজিদের আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, নরসিংদী-৩ তোফাজ্জল হোসেনের আসনে অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, নরসিংদী-৪ মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের আসনে সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল
নারায়ণগঞ্জ-১ কাজী মনিরুজ্জামানের আসনে যুবদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান দীপু, নারায়ণগঞ্জ-২ এএম বদরুজ্জামান খানের আসনে তার ভাই আতাউর রহমান খান আঙ্গুর, নারায়ণগঞ্জ-৩ অধ্যাপক রেজাউল করিমের আসনে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আবুল কালামের আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার,
রাজবাড়ী-২ নাসিরুল হক সাবুর আসনে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, ফরিদপুর-৩ কারাবন্দি জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আসনে বিএনপির সহসভাপতি চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ।
সিলেট বিভাগ: সুনামগঞ্জ-১ রফিক চৌধুরীর আসনে উপজেলা চেয়ারম্যান আনিসুল হক ও সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত সাবেক এমপি নজির হোসেন, সুনামগঞ্জ-৪ ফজলুল হক আসফিয়ার আসনে নূরুল ইসলাম মঞ্জু, সুনামগঞ্জ-৫ কলিম উদ্দিন মিলনের আসনে সাবেক ছাত্রদল নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-১ মরহুম সাইফুর রহমানের আসনে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান, দলের ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির চৌধুরী,
সিলেট-২ নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর আসনে তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা ও ছোট ভাই আসকির আলী, সিলেট-৩ শফি আহমদ চৌধুরীর আসনে লন্ডন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার আবদুস সালাম, সিলেট-৫ মাওলানা ফরিদউদ্দিন চৌধুরীর আসনে সাবেক ছাত্রদল নেতা মামুনুর রশীদ মামুন, সিলেট-৬ জামায়াতের মাওলানা হাবিবুর রহমানের আসনে বিএনপির সৈয়দ মুকবুল হোসেন, সাবেক ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আমীন চৌধুরী, মৌলভীবাজার-২ আবেদ রাজার আসনে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা এমএম শাহীন।
চট্টগ্রাম বিভাগ: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ এসএকে একরামুজ্জামানের আসনে নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশী বিজেপি নেতা উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল হক মাস্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ মরহুম মুফতি ফজলুল হক আমিনীর আসনে তার ছেলে আবুল হাসনাত, সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি উকিল আবদুস সাত্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ ইঞ্জিনিয়ার শ্যামলের আসনে দলের হারুন আল রশীদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ কাজী আনোয়ার হোসেনের আসনে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা তকদির হোসেন জসিম
কুমিল্লা-৫ এএসএম আলাউদ্দিন ভূঁঞার আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, অধ্যাপক ইউনুস, কুমিল্লা-৭ খোরশেদ আলমের আসনে এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, কুমিল্লা-১০ মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার আসনে গফুর ভূঁইয়া, চাঁদপুর-২ নূরুল হুদার আসনে ড. জালাল উদ্দিন, চাঁদপুর-৩ জিএম ফজলুল হকের আসনে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, চাঁদপুর-৪ হারুনুর রশিদ এমপির আসনে এমএ হান্নান, চাঁদপুর-৫ মমিনুল হকের আসনে সাবেক এমপি আবদুল মতিন।
ফেনী-২ জয়নাল আবেদীন এমপির আসনে সংরক্ষিত আসনের এমপি রেহানা আক্তার রানু, বিএনপির সহদফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, ফেনী-৩ মোশাররফ হোসেনের আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু, নোয়াখালী-৩ বরকতউল্লা বুলুর আসনে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মাজহারুল ইসলাম দোলন, এমএ হাসেম, নোয়াখালী-৬ সাখাওয়াত হোসেনের আসনে দলের সাবেক নেতা মোহাম্মদ ফজলুল আজিম এমপি (দলে ফিরিয়ে নেওয়া হতে পারে), চট্টগ্রাম-২ কারাবন্দি সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী (দণ্ড হলে) তার স্ত্রী ফরহাদ কাদের চৌধুরী,
চট্টগ্রাম-৪ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের আসনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, বিএনপির সহ-অর্থ সম্পাদক এসএম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম-৬ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী (দণ্ড হলে) তার ছেলে হুম্মান কাদের চৌধুরী, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, চট্টগ্রাম-৭ এরশাদ উল্লার আসনে দলের সহসভাপতি এম মোরশেদ খান, চট্টগ্রাম-১২ সরওয়ার জামাল নিজামের আসনে অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন, খাগড়াছড়িতে সমীরণ দেওয়ানের আসনে নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া।
পরিবর্তন হবে, তবে নাম উল্লেখ নেই : কয়েকটি আসনে প্রার্থী বদল করা হবে। তবে ওইসব আসনে সম্ভাব্য কোনো প্রার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। এসব আসনের মধ্যে রয়েছে ঢাকা-১৭ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহর আসন, ঢাকা-১৩ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের আসন, ঢাকা-৪ আবদুল হাইয়ের আসন, শেরপুর-১ কারাবন্দি জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের আসন, ঢাকা-১ আবদুল মান্নানের আসন। এসব আসনে কারা মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে দলের হাইকমান্ড নানা হিসাব-নিকাশ কষছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
৪ স্ত্রী বাদ :বিগত নির্বাচনে বিএনপির চার নেতা কারারুদ্ধ থাকায় তাদের স্ত্রীরা দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এবার তাদের স্বামীরা দলীয় মনোনয়ন পাবেন। তারা হলেন_ সিরাজগঞ্জ-২ রুমানা মাহমুদ এমপির আসনে তার স্বামী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কক্সবাজার-১ হাসিনা আহমেদ এমপির আসনে তার স্বামী দলের যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ, নাটোর-২ সাবিনা ইয়াসমিনের আসনে তার স্বামী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কুমিল্লা-৪ মোসা. মাজেদা আহসানের আসনে তার স্বামী মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী।
১৮ দলীয় জোটের নেতাদের জন্য থাকবে অর্ধশতাধিক আসন :শরিক ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের জন্য অর্ধশতাধিক আসন বরাদ্দ রাখবে বিএনপি। এ ক্ষেত্রে জামায়াত ছাড়াও এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ ইবরাহীম, এনপিপির চেয়ারম্যান শওকত হোসেন নিলু, ইসলামী ঐক্যজোটের সাবেক আমির মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে আবুল হাসনাত, ঐক্যজোটের বর্তমান আমির আবদুল লতিফ নেজামী প্রমুখ মনোনয়ন পেতে পারেন।
রাজনৈতিক সমঝোতায়ও দেওয়া হবে ছাড় : সরাসরি ১৮ দলীয় জোটে যোগদান না করলেও ভেতরে ভেতরে রাজনৈতিক সমঝোতা হতে পারে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। সে ক্ষেত্রে ওইসব দলের আসনে দুর্বল প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে ছাড় দিতে পারে বিএনপি। যেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপির নির্বাচনী সমঝোতা হতে পারে তা হলো অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্প ধারা, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি, আ স ম রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডি। সমঝোতা হলে বি. চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, আ স ম রব, মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, মাহী বি. চৌধুরী প্রমুখের আসনে ছাড় দিতে পারে বিএনপি।