এক গভীর মমত্ববোধ ও সহানুভূতির জায়গা থেকে নারীর জীবনকে চলচ্চিত্রে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা ছিল অকালপ্রয়াত নির্মাতা ঋতুপর্ণ ঘোষের। তাঁর বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে সে প্রভাব স্পষ্ট। ‘দহন’, ‘উনিশে এপ্রিল’, ‘চোখের বালি’, ‘বাড়িওয়ালি’ ও ‘মেমোরিজ ইন মার্চ’ চলচ্চিত্রগুলোতে ঋতুপর্ণের নারীকেন্দ্রিক চরিত্রগুলো সমালোচকদের দৃষ্টি কেড়েছিল। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমসাময়িক চলচ্চিত্রনির্মাতাদের মধ্যে তাঁকে ফেমিনিস্ট বলা হয়। তাঁর সব চলচ্চিত্রেই সমাজ বাস্তবতায় নারীর বিভিন্ন বিষয় ফুটে উঠেছে।
দহন
ভারতের জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল ‘দহন’। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছিলেন ঋতুপর্ণ সেনগুপ্তা। তাঁর চরিত্রটি মূলত একজন গৃহবধূর। স্বামীর সামনেই স্থানীয় গুন্ডাদের হাতে তাঁকে অপমান হতে হয়। যখন সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি, সে সময় একজন স্কুলশিক্ষক এগিয়ে এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাঁর প্রতি।
উনিশে এপ্রিল
অর্পণা সেনের দুর্দান্ত অভিনয়ে ফুটে উঠেছে ক্যারিয়ার-সচেতন একজন নারীর কষ্টসহিষ্ণু জীবনের গল্প। স্বামী, ক্যারিয়ার, মেয়েকে নিয়ে পারিবারিক পরিমণ্ডলের এক নারীর জীবনের কাহিনি।
চোখের বালি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘চোখের বালি’ উপন্যাস অবলম্বনে ঋতুপর্ণ নির্মাণ করেছিলেন ‘চোখের বালি’। ঐশ্বরিয়া রাই ও রাইমা সেনের অভিনয়ের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে গ্রামের এক নারীর জীবন। অল্প বয়সে বিধবা নারীদের মর্মযন্ত্রণার কথা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেভাবে তাঁর উপন্যাসে তুলে ধরেছেন, তার ঠিকঠাক চিত্রনাট্যরূপ দিতে চেষ্টা করেছেন ঋতুপর্ণ।
নৌকাডুবি
রাইমা সেন ও রিয়া সেনকে দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নৌকাডুবি’ উপন্যাসের চিত্রায়ণ করেছিলেন তিনি। নারী হূদয়ের কোমল-কঠোর রূপ তিনি ফুটিয়ে তুলেছিলেন পাশাপাশি।
রেইনকোট
হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ও অজয় দেবগন। ভালোবাসা না পাওয়া যন্ত্রণাকাতর নারী আর সংসারের জাঁতাকলে হাঁসফাঁস করতে থাকা নারীর মর্মযন্ত্রণাকে ভালোভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন ঐশ্বরিয়া রাই।
বাড়িওয়ালি
কিরণ খের দুর্দান্ত এক বাড়িওয়ালির চরিত্রে অভিনয় করে সেরা চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছিলেন। একজন বাড়িওয়ালির চলচ্চিত্রে অভিনয় আর তাঁর বাড়িওয়ালি হয়ে ওঠার পেছনের কাহিনি দারুণভাবে চিত্রায়ণ করেছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ।