মেয়র পদে ১২ ও কাউন্সিলর পদে ৭৪১ প্রার্থী
মুকিমুল আহসান হিমেল: খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে আজ। এ চারটি সিটি করপোরেশনের মধ্যে তিনটিতেই একক প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে নামছে প্রধান দুই রাজনৈতিক জোট। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনের মাঠে থাকছেন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন গতকাল পর্যন্ত চারটি সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে ১২ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৯৩ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৫৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নির্বাচনে মোট কাউন্সিলর প্রার্থীর সংখ্যা ৭৪১ জন। এদিকে গতকাল থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন প্রার্থীরা। এবারের সিটি নির্বাচনের সব ক’টিতেই আংশিকভাবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে।
নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, এ নির্বাচনে কেউ যেন আচরণবিধি লঙ্ঘন না করেন সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখা হবে। আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে মাঠে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইসির ভিজিলেন্স টিম নিয়োজিত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের প্রার্থী ও সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত মনিরুজ্জামান মনি ও জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম মধু। এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৪৫ জন ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৪০ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৪৭ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১১৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এ নির্বাচনে মেয়র পদে অংশ নিচ্ছেন ১৪ দল সমর্থিত প্রার্থী ও সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণ, ১৮ দলীয় জোটের প্রার্থী আহসান হাবিব কামাল এবং বরিশাল মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহমুদুল হক খান মামুন।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন তিনজন প্রার্থী। তারা হলেন-১৪ দল সমর্থিত প্রার্থী ও সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী নগর যুবদলের আহ্বায়ক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান। এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬৬ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৫৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এ নির্বাচনে।
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন-১৪ দল সমর্থিত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী এবং মহানগর ছাত্রদলের সাবেক নেতা সালাহ উদ্দিন রিমন। এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৩৯ জন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
৭৩টি ইভিএম : চার সিটি নির্বাচনের চারটি ওয়ার্ডে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। রাজশাহী সিটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৩টি কেন্দ্রে ২০টি, খুলনার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৫টি কেন্দ্রে ২১টি, বরিশাল সিটির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ২টি কেন্দ্রে ১২টি এবং সিলেটের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৩টি কেন্দ্রে ২০টি ইভিএম ব্যবহার করা হবে। এ চার সিটির মোট ২৪ হাজার ৪৯৬ জন ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রদান করার সুযোগ পাবেন। এ চার সিটির নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। গতকাল বিকেলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের এক পরিপত্রের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু, আজ প্রতীক বরাদ্দ : এ চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা যেন নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন না করেন সেজন্য গোপন নজরদারি রাখছে ইসি। গতকাল ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী গতকাল থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন প্রার্থীরা। আজ প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসাররা। গতকাল থেকে শুরু হওয়া আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শেষ হবে আগামী ১৩ জুন মধ্যরাতে। প্রচারণার সময় প্রার্থীরা যেন আচরণবিধি লঙ্ঘন না করেন সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, কোনো প্রার্থী যদি নির্বাচনী আচরণ লঙ্ঘন করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইসির নিজস্ব টিম এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি জানান, নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আগামী বৃহস্পতিবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসবে ইসি।