রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে শনিবার রাজশাহীর স্থানীয় রাজনীতির প্রভাব শালী জামায়াতে ইসলামীর মেয়র প্রার্থী কারাবন্দি ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেন। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ইসমাইল হোসেন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, আমিও বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু এখনো আমার হাতে এসে পৌঁছেনি।
কিন্তু জামায়াতের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারেও কমছেনা এখানকার জামায়াত-বিএনপির দ্বন্দ্ব। বিএনপিকে নয় ১৮ দলীয় জোটকে রাসিক নির্বাচনে ছাড় দিলেও বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের জন্য মাঠে নামবেনা জামায়াত। মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি আবু মোহাম্মদ সেলিম শনিবার সকালে বলেন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের গুঞ্জন হয়তো আজই সত্য হবে। কিন্তু এটাই সব নয়। ১৮ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় নেতাদের চাপে হয়তো জামায়াত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে পারে। কিন্তু স্থানীয় রাজনীতির মাঠে এটা আদৌ সৌহার্দের পরিবেশ সৃষ্টি করবেনা। তিনি বলেন, রাসিক নির্বাচন নিয়ে যা হচ্ছে তা পুরোটাই কেন্দ্রের চাপে। স্থানীয় ভাবে আমরা এককভাবেই নির্বাচনের পক্ষেই। তবে এছাড়া রাজশাহীর বিএনপির সঙ্গে এখানকার জামায়াতের এটা সমঝোতা নয়। এটা ১৮ দলীয় জোটের সঙ্গে জামায়াতের কেন্দ্রের সমঝোতা। ফলে ভাবার কারণ নেই যে রাজশাহী বিএনপির সঙ্গে এখানকার জামায়াতের দূরত্ব দূর হয়ে গেলো। তাহলে কি বিএনপির প্রার্থী বুলবুলের পক্ষে মাঠে নামছেনা রাজশাহী জামায়াতের নেতা-কর্মীরা? এমন প্রশ্নে জবাবে সেলিম বলেন, না। মাঠে থাকবেনা জামায়াত নেতাকর্মীরা। তা হয়ত প্রয়োজনও হবে না।
সমঝোতার বিষয়ে তিনি বলেন, রাজশাহীতে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের কোনো সমঝোতা নয়। এটা ১৮ দলীয় জোটের সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতা। ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও হাজিরা দিতে আদালতে এসে আমাকে বলেছেন, ‘আঠারো দলীয় জোটের নেতা হিসেবে আমি জোটের সিদ্ধান্ত মেনে নেবো।’ বিএনপিকে কখনোই আমরা সরকার বিরোধী আন্দোলনে শরীক হিসেবে আমাদের পাশ পাইনি। সংসদীয় আসন নিয়ে সমঝোতা সম্পর্কে তিনি বলেন, রাজশাহীতে আগে পাঁচটি আসন ছিল। এখন তা ছয়টি। রাজশাহী-১ আসনটি আগেই আমাদের ছিল। আমাদের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এ আসনে আমাদের সাংসদ ছিলেন। রাজশাহী-৬ আসনেও জামায়াতের অবস্থান শক্তিশালী। গত নির্বাচনে রাজশাহী-৩ আসনে চারদলীয় জোট প্রার্থী মহানগর জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয় বিএনপি। যা জোটের সমঝোতার বিরুদ্ধে ছিল। রাজশাহী-২ ও রাজশাহী -৩ আসনেও আমাদের ভোটার বেশি। তাই এখানে বিএনপির সঙ্গে আমাদের সমঝোতার কি আছে? এ ক্ষেত্রে ১৮ দলীয় জোটের কোনো সিদ্ধান্তও মানা হবেনা। রাসিক নির্বাচনে কাউন্সিলর পদেও কোনো সমঝোতা হয়নি বলে জানান তিনি। তবে সাবেক মেয়র মিজানুর রহামন মিনু বলেন, জামায়াত ১৮ দলীয় নেতাদের কেন্দ্রীয় চাপেই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবে কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। ২৭ মে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। জামায়াত নেতারা বুলবুলের জন্যই কাজ করবেন।