কুবিতে অচলাবস্থা কাটেনি : তদন্ত কমিটি গঠন

0
201
Print Friendly, PDF & Email

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ও বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামানকে বাঁচাতে বিএনপিপন্থী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের আন্দোলনে ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা অব্যাহত। টানা চতুর্থ দিনের মত বুধবারও ক্যাম্পাসে তালা লাগিয়ে দেয় ছাত্রলীগ। ফলে গতকালও ক্যাম্পাসে কোন ক্লাস পরীক্ষা হয়নি। সেশনজটের কবলে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। অচলাবস্থার চারদিন পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ  গনিত বিভাগের প্রধান ও সাবেক ভিসি ড. জুলফিকার আলীকে আহ্বায়ক করে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, কারাগারে আটক লোকপ্রশাসন বিভাগের ৫ম ব্যাচের ছাত্র আয়াতুল্লাহ বুখারী নামের এক শিক্ষার্থীকে সহকারী অধ্যাপক মশিউর রহমান কর্তৃক অভ্যন্তরীণ নম্বর দেয়ার অভিযোগ উঠে। আয়াতুল্লাহ বুখারী ছাত্র শিবিরের সমর্থক বলে জানা গেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে মশিউর রহমানের বহিস্কারের দাবীতে লোকপ্রশাসন বিভাগের মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে ছাত্রকে কারাগারে থাকা সত্বেও  নম্বর প্রদানের অভিযোগকে কেন্দ্র করে অন্দোলনে নামে ছাত্রলীগ নামধারী কতিপয় শিক্ষার্থী। এরই জের ধরে গত রোববার থেকে প্রশাসনিক ভবনসহ সকল একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। বন্ধ করে দেয়া হয় সকল ক্লাস ও পরীক্ষা। উল্লেখ্য গত ১৬ তারিখে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ও বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামানেরর হাতে লাঞ্চিত হন একই কলা অনুষদের ডীন ও  সিনিয়র শিক্ষক ড. মোহাম্মদ গোলাম মাওলা। এতে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে পরে সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শিক্ষক মনিরুজ্জামানের বিচারের দাবীতে গত সোমবার সাধারণ শিক্ষকরা উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি জমা দেয়। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয় শিক্ষক সমিতি ও সাদা দলের শিক্ষকরা। অভিযোগ রয়েছে এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে এবং ড. মনিরুজ্জামানকে বাঁচাতেই শিক্ষকদের একটি পক্ষ মরিয়া হয়ে উঠে। বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ছাত্রদের একটি পক্ষকে মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে নামিয়ে দেয়।

নম্বর প্রদানের বিষয়ে মশিউর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কোর্স শিক্ষকের নম্বর নোটিশ বোর্ডে খসড়া টানিয়ে দেয়া হয়। এতে কারো অভিযোগ থাকলে পরবর্তীতে সংশোধন করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে জমা দেয়া হয়। এক্ষত্রে যেটা হয়েছে তা হল, আমি ওই ব্যাচে রুরাল ডেভেলপমেন্ট কোর্স পড়াই। হাতে কলমে শিক্ষার জন্য বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) এ একটি প্রশিক্ষনের ব্যাবস্থা থাকে। যা ১৫ নম্বর ধরা হয়। এই নম্বরটি গড়ে সবাইকে দিয়ে দেয়া হয়। আমি আমাদের বিভাগের কম্পিউটার অপারেটরকে এই ১৫ নম্বর এর মধ্যে ৪ নম্বর এসাইনমেন্ট এবং ৮ নম্বর প্রেজেন্টেশনে সবার নামে বসিয়ে বাকি পরীক্ষার নম্বর যোগ করে নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দিতে বলি। এক্ষেত্রে অনুপস্থিত আয়তুল্লাহ বুখারীর নামেও নম্বর যোগ হয়ে যায়। যা খসরা কপিতে অনিচ্ছাকৃত ভূল। পরর্তীতে বিষয়টি আমার নজরে আসলে আমি সংশোধন করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে জমা দেই। এমনকি এ বিষয়টি সাথে সাথেই আমি বিভাগীয় প্রধানকে লিখিতভাবে জানাই।

অপরদিকে টানা চারদিন ক্যাম্পাস অচল থাকার পর টনক নরেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। ঘটনা তদন্তে সাভেক ভিসি ও গনিত বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. জুলফিকার আলীকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হল ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোষ্ট ড. এ কে এম রায়হান উদ্দিন, ও অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ড.আমিনুল ইসলাম আখন্দ। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

শেয়ার করুন