আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে� সরকার। কারণ দাতা গোষ্ঠিগুলো ভর্তুকি কমাতে চাপ দিচ্ছে সরকারকে। তারা সরকারকে আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি বরাদ্দ কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকার দাতা গোষ্ঠির সাথে একমত নয়। সরকারের আশঙ্কা, ভর্তুকি বিষয়ে দাতা গোষ্ঠির পরামর্শ মানলে জনজীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইতোমধ্যে দাতাসংস্থাগুলো সরকারকে সতর্ক করে ভর্তুকির পরিমাণ জিডিপির ২ শতাংশের কাছাকাছি রাখতে বলেছে। বর্তমানে ভর্তুকির পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৪ শতাংশ। এ পরিস্থিতিতে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বাজেটে ভর্তুকির বিষয়ে মধ্যবর্তী পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি দাতাদের খুশি রাখতে বাজেটে ভর্তুকি কমিয়ে আনার পরিকল্পনা প্রাধান্য পেতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারের কাঁধে এখন ভর্তুকির বিরাট বোঝা। দাতা গোষ্ঠি চাচ্ছে আসন্ন বাজেটে সরকার এ ভর্তুকির পরিমাণ অর্ধেকে নামিয়ে আনতে। এ ব্যাপারে দাতা গোষ্ঠি বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ সরকারের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছে। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার দাতা গোষ্ঠির পরামর্শ মোতাবেক ভর্তুকি কমিয়ে আনলে ভোটারদের ওপর বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা রয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারকে এ বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে। যদিও চলতি অর্থবছরেই সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ আরো বেড়েছে। হিসাব মেলাতে ভর্তুকি কমাতে-বাড়াতে হয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মূল্যে।
সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে সরকার ভর্তুকি বাবদ খরচ নির্ধারণ করে ৩৫ হাজার ৪৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ২০ হাজার কোটি ৪৭৭ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থনীতির বাস্তবতায় ওই বছর ভর্তুকির পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। চলতি অর্থবছরে সরকার ভর্তুকির লাগাম টেনে ধরতে চাইলে তেমন সফল হয়নি। যদিও চলতি অর্থবছরেও ভর্তুকি বরাদ্দের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকাই রাখা হয়েছে জ্বালানি খাতে। আর কৃষি খাতে ভর্তুকি রাখা হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। খাদ্যে ১ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা, রফতানি খাতে ২ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা, পাট খাতে ১ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা ও পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপসহ অন্যান্য খাতে ৪ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় আশাবাদি সার্বিক বিষয় বিবেচনায় এনে আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি কমিয়ে আনা হবে।