রাজধানীতে পৃথক তিনটি অভিযান চালিয়ে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলবার, ২৮টি পিস্তল, রিভলবারের গুলি ও ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য এসব অস্ত্র আনা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা।
গতকাল সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
মনিরুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন ধরে আমাদের কাছে তথ্য ছিল কিছু সন্ত্রাসী বিভিন্ন দেশ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র এনে বিক্রি ও ভাড়া দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এ চক্রের সন্ধানে কাজ করে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে গোয়েন্দা পুলিশ। তারই ধারাবাহিকতায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) দুটি টিম অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
এরা হলেন মোবারক হোসেন মাসুদ (৩০), শহিদুল ইসলাম খোকন (৩২), ফখরুল ইসলাম অপু (৩১), সুমন হোসেন (২৪), কামরুজ্জামান ইমরান (২৬), হালিমা আক্তার লিজা (২২) ও সুচন্দ্রা মান্না রাবেয়া (১৯)। ডিবি পুলিশ এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলবার, ২৮টি পিস্তল ও রিভলবারের গুলি এবং ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে।
মনিরুল ইসলাম জানান, এদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুর শাহআলী মসজিদুল আকবর মার্কেটের সামনে থেকে অস্ত্র কেনাবেচা অবস্থায় একটি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন ও নয় রাউন্ড গুলিসহ মাসুদ এবং খোকনকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তী সময়ে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই রাতে অপর একটি টিম মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের হুমায়ুন রোডের এসএম কার পেইন্ট-এর সামনে অপু ও সুমনকে চ্যালেঞ্জ করলে সুমন পুলিশকে লক্ষ্য করে তিন-চার রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় দুটি বিদেশি পিস্তল ও একটি রিভলবার এবং ১৩ রাউন্ড গুলিসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের হাজী চিনু মিঞা রোডের আজিজ মহল্লার ১৩/৩ নম্বর বাড়ির ৬ষ্ঠ তলার ফ্ল্যাট থেকে দু’টি বিদেশি পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি এবং ২০০ পিস ইয়াবাসহ ইমরান, লিজা ও রাবেয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এরা ভারত থেকে অবৈধ পথে আগ্নেয়াস্ত্র এনে রাজধানীর পেশাদার সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করে এবং অনেক সময় অস্ত্র ভাড়াও দিয়ে থাকে। এ গ্রুপটি গত বৃহস্পতিবার আরও কিছু আগ্নেয়াস্ত্র এনেছে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। সেই অস্ত্রগুলো উদ্ধারে অভিযান চলছে।’
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা অস্ত্র চোরাকারবারি চক্রের সদস্য। এরা ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র বেচাকেনা এবং ভাড়া দেয়াসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
আগামী নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য এসব অস্ত্র আনা হয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, এই অস্ত্রগুলোর ক্রেতা কারা এবং কোন কোন সন্ত্রাসী গ্রুপের কাছে অস্ত্র ভাড়া দেয়া হয়, এরকম একটি তালিকা আমাদের হাতে এসেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন জানান, এ ব্যাপারে চারটি মামলা করা হয়েছে। প্রত্যেক মামলায় ১০ দিন করে মোট ৪০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।