মাদক এখন আর অলিতে গলিতে নয়, এখন এর বিস্তার ঘটেছে ভদ্রসমাজে। শিক্ষিত ভদ্র সমাজের অভিজাত শ্রেণীর নামকরা বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাদকের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সি কিউ কে মুসতাক আহমেদ।
শনিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ মিলনায়তনে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও রিপাবলিক অব কোরিয়া সুপ্রিম প্রসিকিউটর অফিসের নার্কটিক ডিভিশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘যুব সমাজের জন্য মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ সব কথা বলেন।
মুসতাক আহমেদ বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় বাংলাদেশের বাজারে মাদকের মূল্য অনেকাংশে কম হওয়ায় এর ব্যাপকতা অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এর প্রভাব পড়েছে বেশি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা রাত জেগে কাজে-অকাজে বিভিন্ন ধরনের বদ অভ্যাসের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে; যে কারণে এ সমস্ত ছাত্রছাত্রী তথা যুব সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।”
তিনি বলেন, “বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ইয়াবার মতো মরণ নেশায় আটকে যাচ্ছে।”
তিনি মাদককে এখন আর ‘রাষ্ট্রীয় সমস্যা’ নয়, এটিকে ‘আন্তর্জাতিক সমস্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, “মাদক নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, “সরকারিভাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মাদকের ব্যাপকতা কমাতে কাজ করে যাচ্ছে।”
মাদকের অপব্যবহার রোধে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ইকবাল, রিপাবলিক অব কোরিয়া সুপ্রিম প্রসিকিউটর অফিসের নার্কটিক ডিভিশনের পরিচালক কিউল হিলি, সংস্থার বাংলাদেশ মিশনের উপ-প্রধান কিম হিওন জু বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী কয়েকটি সংগঠন এতে অংশ নেয়। এর মধ্যে ইউথ ফার্স্ট কনসালট্যান্টের নির্বাহী পরিচালক ড. পিটার হালধার, অভিভাবকদের মধ্যে মিসেস আঙ্গুর বেগম, কেয়ার বাংলাদেশের টিম লিডার ডা. রূপালী শিরিন বার্ন প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে মাদকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধিতে রিপাবলিক অব কোরিয়া সুপ্রিম প্রসিকিউটর অফিসের নার্কটিক ডিভিশনের পক্ষ থেকে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে দুটি হুন্দাই মাইক্রোবাস, ৩০টি ল্যাপটপ ও ৩০টি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর তুলে দেন কিউল হিলি।
এর পর কোরিয়া রিপাবলিকের পক্ষ থেকে এসপিও সম্পর্কিত একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন ও ‘তায়কান’ পরিবেশন করেন জিঙসিংলি।