জাতীয় সংসদে উত্থাপিত শিশু আইন-২০১৩ নিয়ে আলোচনা হলেও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে পারেনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে বিলে এতিমখানা ও মাদ্রাসার শিশুদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অপব্যবহারে জেল জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী ৫ জুন কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।
আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটির সভাপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে অংশ নেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন। বৈঠকে কমিটির সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, চেমন আরা বেগম, এএন মাহফুজা খাতুন বেবী মওদুদ ও অপু উকিল এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, সংসদে উত্থাপিত এই বিলে শিশুদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার বন্ধের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনাকালে কমিটির সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাদ্রাসা ছাত্রদের এনে রাজধানীতে হেফাজতে ইসলামীর নাশকতার কথা তুলে ধরে তা বন্ধের বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করেন। বিলে এসংক্রান্ত বিধান যুক্ত করে আগামী বৈঠকে প্রস্তাব উত্থাপন করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বলা হয়। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে আগামী সংসদ অধিবেশনের রিপোর্ট উত্থাপন করা হবে।
এ বিষয়ে কমিটির সদস্য অপু উকিল বলেন, আইনে শিশুদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করাকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। কারণ রাজনৈতিক কাজে ব্যবহারের ফলে শিশুদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। আইনে এই বিষয়টি সংযোজন করা গেলে এই প্রবণতা বন্ধ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন বলেন, এতিমখানায় শিশুরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপব্যবহারের শিকার হচ্ছে। তাই কোনভাবেই যেন তাদের কেউ যেন অপব্যবহার করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে প্রস্তাবিত আইনে শিশু নির্যাতনের অপরাধে সর্বোচ্চ ৫বছরের জেল ও এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। আর এসংক্রান্ত অপরাধ বিচারের জন্য সকল জেলা ও মহানগরে পৃথক শিশু আদালত চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে শিশু কল্যাণ বোর্ড গঠন করা হবে। প্রত্যেক থানায় একটি শিশু বিষয়ক ডেস্ক থাকবে, যার দায়িত্বে থাকবেন থানার একজন উপ-পরিদর্শক।