ডিসিসি নির্বাচন: আগ্রহ হারাচ্ছেন ১৪দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা

0
156
Print Friendly, PDF & Email

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে অনেকটাই আগ্রহ হারাচ্ছেন ১৪ দলের সম্ভাব্য ও মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা। নির্বাচন আদৌ হবে কি-না এ ব্যাপারেও সন্দিহান তারা।

নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে নিশ্চিত নন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের প্রার্থীরা। নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে আগাম প্রস্তুতির ব্যাপারেও তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না কোনো আগ্রহ।

জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ডিসিসি নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতির কথা শোনা গেলেও সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ওই সময়ে নির্বাচনের সম্ভাবনা ক্ষীণ।

বিভক্ত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন- ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বেশ কয়েকজন প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে না পেরে তারা রয়েছেন চুপচাপ।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর বেশ কয়েকবার মেয়াদোত্তীর্ণ ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কথা শোনা যায়। সর্বশেষ গত বছর ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগে (উত্তর ও দক্ষিণ) ভাগ করার পর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতে মামলার কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়।

এ সময় যারা সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে প্রচারণায় নেমেছিলেন তারা এখনো রয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।
 
এদিকে, দেশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ক্ষমতা আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে চায় না। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের প্রভাব আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত গড়াবে। সেক্ষেত্রে নেতিবাচক ফলাফল দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করবে।

তাছাড়া জাতীয় নির্বাচনের সময়ও ঘনিয়ে এসেছে। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য ইসির হাতে সময়ও সীমিত।

এই স্বল্প সময়ে ঝুঁকি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরাও নির্বাচনের ব্যাপারে খুব বেশি আগ্রহী নন বলে একটি সূত্র জানায়।

এদিকে, নির্বাচনের সম্ভাবনা ক্ষীণ হলেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারুজ্জামান, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মান্না এবং মহাজোটের শরিক জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য শিরিন আক্তারের নাম শোনা যাচ্ছে।

যদিও মাহমুদুর রহমান মান্না বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় নেই। ২০০৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়েন। তিনি নাগরিক কমিটির ব্যানারে প্রার্থী হবেন। এছাড়া গতবার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরেই শোনা গিয়েছিল, জাসদ নেত্রী শিরিন আক্তারকে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রার্থী করতে পারে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। 

দক্ষিণে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন- ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মোহাম্মদ সেলিম এবং মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ।

ডিসিসি নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বাংলানিউজকে বলেন, “নির্বাচন হলে তখন দেখা যাবে। অনেক দিনই তো নির্বাচনের কথা শোনা যাচ্ছে।”

প্রার্থী হবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সেটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।”

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে মাহমুদুর রহমান মান্না বাংলানিউজকে বলেন, “নির্বাচন কবে হবে, সেটাই এখনো নিশ্চিত না। দীর্ঘদিন হলো অনির্বাচিত প্রশাসক দিয়ে চলছে সিটি করপোরেশন। সরকার এ নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের খেলা খেলছে।”

তিনি আরও বলেন, “সীমানা জটিলতা দূর হয়নি। এ ব্যাপারে সরকারও কোনো ভাষ্য দেয়নি।”

হাজী সেলিম বলেন, “মানুষ সিটি করপোরেশনের সেবা পাচ্ছে না। মানুষ নির্বাচনের জন্য আশা করে বসে আছে। নির্বাচন হবে অনেবার শুনছি, কিন্তু দেখি না তো। প্রার্থী হওয়ার শখ মিটে যাচ্ছে।”

শেয়ার করুন