ধানের দাম কম : হতাশ কৃষক

0
176
Print Friendly, PDF & Email

সারাদেশে ইরি-বোরো ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। কিন্তু এবারও ধানের দাম উত্পাদন খরচের চেয়ে কম হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
সাঘাটা (গাইবান্ধা) : গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার সর্বত্রই ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াই মৌসুম শুরু হয়েছে। কৃষকরা ধান কেটে ঘরে তুলছেন। ফলনও হয়েছে আশানুরূপ। কিন্তু ভালো ফলনেও তাদের চোখে-মুখে হাসি নেই। ধানের দাম কম হওয়ায় কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন পল্লীর কৃষকদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, প্রতি মণ ধান উত্পাদন করতে ৬শ’ টাকার ওপর খরচ হয়। সার, সেচ, কীটনাশক ও শ্রমিক মজুরি দিয়ে প্রতি মণের উত্পাদন খরচ অবশিষ্ট থাকছে না। তারা বলছেন, ধান বিক্রি করতে হচ্ছে ৪২০-৪৫০ টাকা দামে। এদিকে হাট-বাজারে ধান উঠলেও ক্রেতা না থাকায় তা বিক্রি হচ্ছে না। ফলে তারা কম দামে চাতাল মালিক ও মধ্যস্বত্বভোগী মহাজনদের কাছে কম দামে বিক্রি করছেন। সরেজমিনে সাঘাটার বারোকোনা, জুমারবাড়ী, ভরতখালী, হলদিয়া, বোনারপাড়া ও কচুয়া ঘুরে জানা যায়, কৃষকরা আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না। এতে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। রাঘবপুর গ্রামের নুরুল মিয়া জানান, এক মণ ধানের উত্পাদন খরচ যা হচ্ছে—বিক্রয় করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের পথে বসতে হবে। কম দামে ধান বিক্রি করে একই আক্ষেপ করলেন বোনারপাড়ার বাটী গ্রামের কৃষক আজাহার আলী। উপজেলা কৃষি অফিসার সোহেল মোহাম্মদ শামসুদ্দীন ফিরোজ জানান, এবার পুরো উপজেলায় ১২ হাজার ১৭৫ হেক্টর উফশী, ২৬শ’ হেক্টর হাইব্রিড ও ১৫০ হেক্টর দেশি জাতের ধান চাষ হয়েছে।
সৈয়দপুর (নীলফামারী) : নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের সর্বত্র কষ্টে ফলানো বোরো ধান কাটা শুরু হলেও ধানের দাম কম হওয়ায় কৃষকরা পড়েছেন মহাবিপদে। প্রতি বিঘা ধান কাটা হয় ৩ হাজার টাকায়। আর প্রতি মণ ধান স্থানীয় হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায়।
জানা গেছে, উপজেলার অধিকাংশ কৃষকই বোরো ধান আবাদ করেন ধার-দেনাসহ চড়া সুদের ওপর ঋণ করে। এছাড়া তাদের হাতে শ্রমিকের মজুরি দেয়ার মতো কোনো জমানো টাকাও থাকে না। ফলে একদিকে জমির নতুন ধান ঘরে এলেও সংসারের খরচ, শ্রমিকের মজুরি আর ঋণ শোধ করতে গিয়ে কৃষক সস্তায় নতুন ধান ফড়িয়া ব্যবসায়ীর হাতে তুলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
সৈয়দপুর হাতীখানা বানিয়াপাড়ার কৃষক কছিমুদ্দিন জানান, গেল বছরে ধান কাটা প্রতি বিঘা ছিল ২ হাজার টাকা আর এ বছর দিতে হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। তাই ধান কাটা-মাড়াই নিয়ে আমরা খুবই সমস্যায় আছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হোমায়রা মণ্ডল জানান, চলতি বছর সৈয়দপুর উপজেলায় বোরো আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৫৩০ হেক্টরে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ৭৫০ হেক্টর ও উফশী জাতের ৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর। এ জন্য উত্পাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার ৬৭৪ মেট্রিক টন।। ফলন দেখে কৃষকরাও বেজায় খুশি, কিন্তু ধানের দাম কম হওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

শেয়ার করুন