টাকা অভাবে প্রতিবেশীদের মিষ্টিমুখ করাতে পারেনি হতভাগ্য মা ছকিনা বেগম। তবে ছেলের ভালো ফলের খবর শুনে বাড়িতে আসা লোকজনকে প্রতিবেশীর দেয়া তরমুজ খাইয়ে খুশি করানোর চেষ্টা করেছেন মা ছকিনা বেগম। ছেলে আবদুল হাকিমকে আনন্দের দিনে কিছু উপহার দিতে না পারলেও আদরের চুমু খাইয়ে আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে দোয়া করেছেন তিনি।
চিত্রটি ছিল নীলফামারী সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার। বৃহস্পতিবার এসএসসির ফল বের হওয়ার পর বাড়িতে গিয়ে চোখে পড়ে এমন দৃশ্য। প্রতিবেশীরা বাড়ি এসেছেন পরীক্ষার ভালো খবর শুনে। কিন্তু তাদের মিষ্টিমুখ করানোর সামর্থ্য নেই মায়ের। প্রতিবেশী আবদুস সাত্তারের দেয়া তরমুজ খাইয়ে ছেলের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
প্রতিবেশী আবদুস সাত্তার জানালেন, বাবা মহররম আলী আট বছর আগে মারা যান। পড়াশোনার পাশাপাশি আবদুল হাকিম ক্ষেতে খামারে কাজ করত। নীলফামারী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের থেকে আবদুল হাকিম এবারে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। তিন ভাই, দুই বোন আর বিধবা মাকে নিয়ে তাদের সংসার। ভালো ছাত্র ও গরিব হওয়ার কারণে শিক্ষকরা তাকে পড়িয়েছেন বিনা পয়সায়। অভাব অনটনের সংসারে মা ঝিয়ের কাজ করতেন অন্যের বাড়িতে। লেখাপড়ার খরচ জোগান দিতে আবদুল হাকিম সুযোগ পেলেই ক্ষেতে খামারে কাজ করে যে টাকা পেত তা জমা করত মায়ের কাছে। যা দিয়ে চলত লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের টুকিটাকি খরচ।
প্রতিবেশী নুর ইসলাম জানান, হতদরিদ্র ঘরের ছেলে আবদুল হাকিম অত্যন্ত মেধাবী। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্ষেতে খামারে কাজ করে নিজের লেখাপড়ার টাকা জোগার করত। ব্যক্তিগতভাবে তাকে সহযোগিতা করেছি অনেকভাবে যেন সে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে।
অসহায় মা ছকিনা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বার বারই বলছেন ‘মুই মোর ছাওয়ালটাক কেমন করি লেখাপড়া করাইম’ মোর যে অতুলা টাকা পায়সা নাই। তোমরা সবায় মোর ছাওয়ালটাক এ্যানা ব্যবস্থা করি দ্যাও।’