জামায়াতে ইসলামীর ডাকা সকাল সন্ধ্যা হরতাল প্রতিরোধে রাজধানীতে সকাল থেকেই মাঠে রয়েছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা৷ অপরদিকে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ থেকে সংগঠনটির মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে একটি মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা ঘুরে রাজু ভাস্কর্য প্রদক্ষিণ করে৷
জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে রোববার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এবং শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ৷ সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকায় সম্মিলিত আওয়ামী লীগ সমর্থক গোষ্ঠীর ব্যানারে ২২টি সংগঠন হরতাল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে৷ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া৷ অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. সেলিম, সহ-সভাপতি মুকুল চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও সমাবেশ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল হক সবুজ প্রমুখ৷
এছাড়া সাড়ে ৯ টায় মিছিল ও মানববন্ধন করে ২০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ৷ ১০ টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী ওলামা লীগ৷ এতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস বিন হেলালী৷ সাড়ে ১০ টার দিকে গুলিস্তান-পল্টন-বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকায় মিছিল করে জাতীয় শ্রমিক লীগ৷ একই সময় খদ্দর মার্কেটের সামনে সমাবেশ করে কৃষক লীগ৷ এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ও প্রচার সম্পাদক এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ৷
একই দাবিতে মিছিল করে ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) ছাত্রলীগ৷ এতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি আনিসুর রহমান সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান রানাসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা৷ একই দাবিতে পরিবহন শ্রমিক লীগের ব্যানারেও একটি বড় মিছিল বের হয় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকায়৷ প্রতিটি মিছিল সমাবেশ থেকেই জামায়াতের রোববারের হরতালকে অযৌক্তিক ও নৈরাজ্যকর উলেস্নখ করে দেশের মানুষ এই হরতাল প্রত্যাখান করেছে বলে দাবি করা হয়৷
এদিকে রোববার সোয়া ১২টার দিকে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ থেকে সংগঠনটির মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে একটি মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা ঘুরে রাজু ভাস্কর্য প্রদক্ষিণ করে৷
এরপর হোটেল রূপসী বাংলা হয়ে আবার শাহবাগে মিলিত হয়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে৷ মিছিল থেকে ‘জামায়াত-শিবিরের অবৈধ হরতাল- মানি না মানবো না, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করো করতে হবে’ -এরকম সেস্নাগানে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রকম্পিত করে তোলে৷
মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইমরান এইচ সরকার বলেন, “চিহ্নিত কুখ্যাত রাজাকার কামারুজ্জামানের রায়ের পর জামায়াত-শিবির দেশব্যাপী সহিংস হরতাল আহ্বান করেছে৷ পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী প্রতিবারের মতো এবারও তাদের এই অযৌক্তিক হরতালের প্রতিবাদে হরতাল বিরোধী মিছিল করছে গণজাগরণমঞ্চ৷”
তিনি আরোও বলেন, “জনগণ জামায়াত-শিবিরিরে হরতাল প্রত্যাখান করেছে৷ তারা আগে যেভাবে সহিংস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতো রাজপথে জনগণের উপস্থিতিতে এখন আর সেটা করতে পারছে না৷ সাধারণ জনগণ তাদের দোকান-পাট খোলা রেখেছে৷ ব্যাংক-বীমা স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রয়েছে৷ এতেই বোঝা যায় জনগণ হরতাল প্রত্যাখান করেছে৷
ইমরান আরো বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে৷” এই অহিংস আন্দোলনে অংশ নিয়ে সর্বস্তরের জনগণকে রাজপথে নেমে জামায়াত-শিবিরের নৈরাজ্যের প্রতিরোধের আহ্বান জানান তিনি৷