বাবার সংসারে ঠাঁই হয়নি। মা আর ছোট ভাইকে নিয়েই রাজনের(১২) সংসার। তার পরও থেমে থাকেনি পড়া লেখা। সংসার আর পড়ালেখার খরচ যোগাতে এক বেলা বাদাম বিক্রি করতে হয় রাজনকে। এভাবে চলছে রাজনের জীবন…।
রাজনের বাবার নাম তফিজ সরদার। পেশায় কুলি। নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর শহরের খলিফাপাড়া মহল্লায় তাদের বাস। এক খন্ড ভিটেমাটিতে দুইটি টিনের ছাপড়া ঘরে তারা থাকে। রাজন যখন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। তখন বাবা তফিজ দ্বিতীয় বিয়ে করে আলাদা সংসার শুরু করে। বিপাকে পড়েন রাজনের মা রেজেনা খাতুন। কারণ, রেজেনার কোলে আরেক শিশু রাহুল (৪)।
রাজন জানায়,- সে আনন্দ নগর সরকারি প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেনিতে পড়ে। সংসার আর পড়ার খরচ চালাতে শুক্রবারসহ শনিবার ও মঙ্গলবার শহরের চাঁচকৈড় বাজারে ফেরি করে বাদাম বিক্রি করে। অন্যদিনে এক বেলা স্কুল আরেক বেলায় বাদাম বিক্রি করে থাকে। বাদাম বিক্রি করে প্রতিদিন ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা আয় হয়। ওই টাকা মায়ের হাতে তুলে দেয় রাজন। তবে ছোট ভাই রাহুল নিয়মিত স্কুলে যায়। সে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।
রাজন জানায়,- তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর সংসারে অভাব শুরু হয়। কারনে অকারনে মায়ের সাথে বাবার ঝগড়া হতো। সেই সাথে মারধর। নিরুপায় হয়ে তার মা বাবার সংসার ছাড়ে। এখন স্কুলের অদুরে সড়কের পাশে এক আত্মীয়ের জায়গায় একটি টিনের ছাপড়া তুলে দুই ভাই ও মা কষ্টে থাকে। সংসার চালাতে মা রেজেনা খাতুন মাঠে দিন মজুরির কাজ করে। রাজন বলে,- দুই ভাই পড়ালেখা শিখে মায়ের কষ্ট লাঘব করবে।
রাজনের স্কুলের প্রধান শি¶ক মো. আফতাব উদ্দিন জানান,- রাজন অনিয়মিত হলেও পড়ালেখায় ভাল। তার ছোট ভাই রাহুলও মেধাবী। স্কুলের প¶ থেকে তাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়। তবে সুযোগ পেলে তার পড়ালেখায় আরো ভাল করতে পারবে।