ঝালকাঠিতে সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। মাঠের পর মাঠ ফুটে থাকা সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে কৃষকের চোখে-মুখে স্বপ্ন পূরণের আশা দেখা যাচ্ছে।মৌসুম শেষে এখন ফসল ঘরে তোলার পালা।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রাজাপুরসহ জেলার চারটি উপজেলায় এবার সূর্যমুখীর চাষ করেছেন চাষিরা।
প্রায় ৪শ একর জমিতে দুই শতাধিক কৃষকের অনেকেই প্রথম বারের মতো সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। এর মধ্যে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের খাদ্য ও নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ১২৭ জন কৃষককে ৮৩ একর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করার জন্য আর্থিক অনুদান দিয়েছে।
পতিত বা ফসলী জমিতে সূর্যমূখীর চাষ করে তিন মাস দশ দিন অর্থাৎ একশ দিনের মধ্যেই ফসল ঘরে তোলা যায়।এমন উন্নত মানের বীজ সরবরাহ করেছে ব্র্যাক।
নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সূর্যমুখী ফুল চাষ করার সঠিক সময়।সূর্যমূখী চাষের জন্য এ জেলার আবহাওয়াও বেশ ভালোভাবেই মানিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে জেলার বলারজোড় গ্রামের সূর্যমুখী চাষি সোহরাপ হোসেন, খলিল মাওলানা, আলতাফ ও নজরুল ইসলামসহ একাধিক কৃষক বাংলানিউজকে জানান, একর প্রতি ১৩ হাজার টাকা তাদের উৎপাদন খরচ হয়েছে।সঠিকভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারলে বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী একর প্রতি ২০ হাজার টাকা লাভ হবে। হাট-বাজার ছাড়াও ব্র্যাকসহ কিছু প্রতিষ্ঠানে বাজার দামেই এ ফসল ক্রয় করবে।
ব্র্র্যাকের খাদ্য ও নিরাপত্তা কর্মসূচির উপজেলা ব্যবস্থাপক ফারুকুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, ৮০ জন সূর্যমুখী চাষি ৪৮ একর জমিতে সুর্যমুখী চাষ করেছেন। তাদের প্রতি একরে ৭ হাজার ৫০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। প্রতি একরে ৩০ থেকে ৩৫ মণ সূর্যমুখীর বীজ পাওয়া যাবে। যা কমপক্ষে দেড় হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করা যাবে। এ অবস্থায় পোকার আক্রমণ ঠেকিয়ে আর সামনে ঝড়-বৃষ্টি না হলে কৃষক যে পরিমাণ উৎপাদন পাবে তাতে বেশ লাভবান হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অভিদপ্তরের উপ-পরিচালক মজিবুল হক মিয়া বাংলানিউজকে জানান, জেলায় প্রায় ৪’শ একর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। এ সূর্যমুখী চাষকে কৃষি বিভাগ নতুন সম্ভাবনা হিসেবে মনে করেছে। সরিষা কিংবা সয়াবিন তৈল বাদ দিয়ে সূর্যমুখী থেকে উৎপাদিত ভোজ্য তৈল জেলার চাহিদা মেটাতে পারে বলে আশা করেছেন তিনি।