পাবনার বেড়া উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি আদায় করে পরীক্ষা চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকেরা।
শিক্ষকেরা বলছেন, গত আট বছরে কাগজসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণের দাম দুই থেকে তিন গুণ বেড়েছে। কিন্তু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষার ফি আগের মতোই আছে। এতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি আদায় করে পরীক্ষার খরচ মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষকদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা জোগাড় করতে তাঁদের বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। নয়তো নিজের পকেট থেকেই টাকা দিতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২০০৫ সালে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফি প্রথম শ্রেণীতে ছয় টাকা, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীতে আট টাকা, চতুর্থ শ্রেণীতে ১০ টাকা ও পঞ্চম শ্রেণীতে ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ ফি নির্ধারণ করে দেয়। এ হারে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে তা দিয়ে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র তৈরি করে পরীক্ষা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। বিদ্যালয়গুলোতে বছরে বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়াও প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা হয়ে থাকে।
শিক্ষকেরা জানান, ২০০৫ সালে ফি নির্ধারণ করার পর গত আট বছরে কাগজসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণের দাম অনেক বেড়ে গেছে। পাশাপাশি সৃজনশীল পদ্ধতির কারণে প্রশ্ন ও উত্তরপত্রের কলেবরও বেড়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা ফির টাকার দুই থেকে তিন গুণ বেশি খরচ হচ্ছে। বাড়তি খরচ মেটাতে উপজেলার কোনো কোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৮-১০ টাকা করে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হলেও ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
উপজেলার বিবি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদৎ হোসেন বলেন, তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ছয়টি করে বিষয়ের পরীক্ষা হয়। ওই তিন শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়ম অনুযায়ী যথাক্রমে ৮, ১০ ও ১২ টাকা করে ফি আদায় করা হচ্ছে। অথচ পরীক্ষা নিতে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর পেছনে ব্যয় হচ্ছে ১৮ থেকে ২৫ টাকা। বাড়তি টাকার ব্যবস্থা শিক্ষকদেরই করতে হচ্ছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, পরীক্ষার খরচ জোগাড় করতে শিক্ষকদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। বাড়তি খরচ মেটাতে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে দ্বারস্থ হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষকদের নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিতে হচ্ছে।
বেড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষার ফি অবশ্যই বাড়ানো দরকার। সরকারি ভর্তুকি না থাকায় পরীক্ষার ব্যয়ভার শিক্ষকদেরই নিতে হয়। পরীক্ষার ফি বাড়ানোর জন্য শিক্ষকেরা আমাদের কাছে বারবার দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে।’
(রুপশী বাংলা নিউজ) ২৩ এপ্রিল /২০১৩.