বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় বিভিন্ন পদে নিয়োগযোগ্য প্রার্থীদের নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন করে আসছে। ২০১২ সাল পর্যন্ত আটবার শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছরের এপ্রিলের শুরুতেই নবম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা-২০১৩-এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এই বিজ্ঞপ্তিতে কিছু পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিবর্তন করা হয়েছে। এ বিষয়েই আমার আলোচনা।
এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানতে পারলাম, নবম বিজ্ঞপ্তিতে কলেজ পর্যায়ের প্রভাষক কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ের প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে ১. কম্পিউটার বিজ্ঞান/কম্পিউটার প্রকৌশলে দ্বিতীয় শ্রেণীর স্নাতকোত্তর বা চার বছর মেয়াদি দ্বিতীয় শ্রেণীর সম্মান ডিগ্রি অথবা ২. বিজ্ঞান বিভাগে (পদার্থ, রসায়ন, প্রাণিবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, গণিত ও পরিসংখ্যান) দ্বিতীয় শ্রেণীর স্নাতকোত্তরসহ সরকার অনুমোদিত যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ন্যূনতম ছয় মাস মেয়াদে কম্পিউটারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। আর আগের সব বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ ছিল, যেকোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসহ উল্লিখিত প্রতিষ্ঠান থেকে ন্যূনতম ছয় মাস মেয়াদি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ। কিন্তু নবম বিজ্ঞপ্তিতে শুধু বিজ্ঞান বিভাগের কয়েকটি বিষয় উল্লেখ থাকায় কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগের অন্যান্য বিষয়ের স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারছেন না।
অথচ একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান—সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ রয়েছে।কিন্তু প্রভাষকের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের কয়েকটি বিষয় ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের প্রার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। যেহেতু বিষয়টি সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ রয়েছে, সেহেতু সব বিষয়ের প্রার্থীরা কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ে আবেদন করার অধিকার রাখেন।
অষ্টম বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিবন্ধন পরীক্ষায় অনেক প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছিল, কিন্তু উত্তীর্ণ হতে পারেননি। আবার আগের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী অনেক শিক্ষক বিভিন্ন কলেজে শিক্ষকতা করে আসছেন, কিন্তু নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় নিয়োগের বৈধতা পাচ্ছেন না। কোনো কোনো শিক্ষক
খণ্ডকালীন হিসেবে শিক্ষকতা করে আসছেন। কেউ কেউ একাধিকবার নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এখন নবম বিজ্ঞপ্তিতে শুধু বিজ্ঞান বিভাগের কয়েকটি বিষয় উল্লেখ থাকায় তাঁরা আবেদন করতে পারছেন না।
কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন, বিষয়টি পর্যালোচনা ও যাচাইপূর্বক পরবর্তী সংশোধনীর মাধ্যমে সব বিভাগের প্রার্থীদের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ে প্রভাষক পদে আবেদনের সুযোগ দানে সুদৃষ্টি কামনা করছি।
মো. আবুল কাসেম
kashemru@yahoo.com
প্রকল্প বাস্তবায়ন
একটি প্রকল্প বিভিন্ন কারণে সময়মতো ও সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয় না। প্রথম কারণ, প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রতা। দীর্ঘ সময় পর সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে ভূমি অধিগ্রহণের প্রাক্কলন এলেও ওই প্রাক্কলনের অর্থ প্রদানে থাকে নানা জটিলতা। ভূমি মন্ত্রণালয়ের শর্তানুযায়ী, ভূমি
অধিগ্রহণের প্রাক্কলন সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের সব টাকা পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু নানা নিয়মকানুনের বেড়াজালে পড়ে প্রায়ই দুই মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ অর্থছাড় করতে পারে না।ফলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ওই এলএ কেসটি বাতিল করে আবার ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করেন। এতে সময় ও অর্থ দুটোই বেশি লাগে।
দ্বিতীয় কারণ, প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থ সঠিক সময়ে ও সঠিক পরিমাণে পাওয়া যায় না। ফলে ওই বছর প্রকল্পের যে কাজ হওয়ার কথা ছিল, তা হয় না। এ জন্য প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে হয় বা প্রকল্প সংশোধন করতে হয়। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো বা প্রকল্প সংশোধন প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল।
প্রকল্প সংশোধনের জন্য ফাইল পার করতে যেমন টেবিলে টেবিলে নজরানা দিতে হয়, তেমনি প্রকল্প পরিচালকের দু-এক জোড়া জুতাও ক্ষয় হয়। প্রকল্পের অর্থবছরে চার কিস্তিতে চারবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক ছাড় করা হয়। প্রতিবার অর্থছাড় করতে প্রকল্প পরিচালককে চরম হয়রানির শিকার হতে হয়। অথচ প্রকল্পের বাস্তবায়নসংক্রান্ত কোনো সমস্যার সৃষ্টি হলে প্রকল্প পরিচালককে এককভাবে দায়ী করা হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন বা আইএমইটি—কাউকেই দায়ী করা হয় না। এসব সমস্যা সবকিছুই সরকারের জানা, কিন্তু সমস্যা সমাধানে সরকার আন্তরিক নয়।অহেতুক জটিলতা সৃষ্টি না করে এবং কিছু কিছু বিধিবিধান সংশোধন করলেই এ সমস্যার সমাধান করা যায়।
আশা করি, সরকার এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
মো. হেদায়েত হোসেন
ধানমন্ডি, ঢাকা।
(রুপশী বাংলা নিউজ) ২৩ এপ্রিল /২০১৩.