আওয়ামী লীগের সংসদীয় দল দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে আবদুল হামিদকে মনোনয়ন দিয়েছে। সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাঁর মেয়াদকাল হবে শপথ গ্রহণের দিন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর।
গতকাল রোববার সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত হয়। জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এই মনোনয়নের মাধ্যমেই আবদুল হামিদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গেছে।
তফসিল অনুযায়ী ২৯ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। তবে গতকাল শেষ দিনে আর কেউ মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়ায় নির্বাচন কমিশন আজ আবদুল হামিদকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করতে পারে।
আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেওয়ার পরই স্পিকারের পদটি শূন্য হয়ে যাবে। দলের শীর্ষ নেতারা নতুন স্পিকার খোঁজা শুরু করেছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার পদে শিরীন শারমিন চৌধুরী, শওকত আলী, আবদুল মতিন খসরু, আলী আশরাফ প্রমুখের নাম শোনা যাচ্ছে। আবার স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার দুজনেই নতুন হতে পারেন। তবে প্রধানমন্ত্রী এ পদে মনোনয়নের জন্য আরও কয়েক দিন সময় নিতে পারেন বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক হয়। বৈঠকের শুরুতেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সংসদীয় দলের সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি পদটি দেশের সর্বোচ্চ পদ এবং সম্মানীয়। আমরা চাই সর্বসম্মতভাবে এ পদে মনোনয়ন দিতে। কারণ, কোনো একজন বিরোধিতা করলে এ পদটি নিয়ে বিতর্ক হবে।’ এরপর তিনি রাষ্ট্রপতি পদে সংসদীয় দলের মতামত চান। সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যের পরই তোফায়েল আহমেদ আবদুল হামিদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাঁর নাম প্রস্তাব করেন। আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও লতিফ সিদ্দিকী তা সমর্থন করেন। একপর্যায়ে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীও সমর্থন করেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, সংক্ষিপ্ত আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বসম্মতভাবে রাষ্ট্রপতি পদে আবদুল হামিদের নাম ঘোষণা করেন। এরপর বৈঠক থেকেই হুইপ আ স ম ফিরোজের নেতৃত্বে হুইপ সেগুফতা ইয়াসমিন, আবদুল মতিন খসরু ও ফজলে রাব্বী মিয়া নির্বাচন কমিশনে গিয়ে আবদুল হামিদের নামে চারটি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। বৈঠকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুসারেই অনুষ্ঠিত হবে। তিনি দলীয় সাংসদদের নিজ নিজ এলাকায় জনগণের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন।
সংসদীয় দলের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী দলীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকারের কার্যালয়ে গিয়ে আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় কুশল বিনিময়ের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্রে সই করেন আবদুল হামিদ। মনোনয়নপত্রে রাষ্ট্রপতি পদে আবদুল হামিদের নাম প্রস্তাবকারী হিসেবে সৈয়দ আশরাফ ও সমর্থনকারী হিসেবে তোফায়েল আহমেদের নাম রয়েছে।
পরে তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমদের হাতে তিনটি মনোনয়নপত্র জমা দেন।
২২ এপ্রিল /২০১৩.