বাংলা নববর্ষ বাঙালি চেতনা ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। এই দিনটির তাৎপর্য তাই বাঙালির কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দিনটি উদ্যাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী কর্মসূচি রাখে নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। প্রকাশ পায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি।
বাংলা নববর্ষ উৎসব শুরু হয় মোগল সম্রাট আকবরের আমল থেকে। সম্রাট আকবর বাংলা পঞ্জিকা চালু করেন ১৫৮৫ সালের ১০ মার্চ। কিন্তু এটা কার্যকর হয় ১৬ মার্চ ১৫৮৬ থেকে। সেই সময় থেকে উদ্যাপিত হয়ে আসছে ‘নববর্ষ’ (বাংলা নববর্ষ) উৎসব।
বাংলা ক্যালেন্ডার ১৪২০। নতুন বছরের নতুন ক্যালেন্ডার কতজন সংগ্রহ করেছি কিংবা সংরক্ষণ করি, সেই পরিসংখ্যানে গেলে হয়তো হতাশ হতে হবে। যা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার।
বাংলা নববর্ষ প্রকৃতির কোলে, মানুষের হূদয়ে প্রত্যেক জায়গায় তার ছাপ রেখে যায়। নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আর আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটি আমরা উদ্যাপন করি। কিন্তু তার পরও বুকের মধ্যে একটুখানি কষ্ট থেকে যায়, আর তা হলো বাংলা ক্যালেন্ডার ব্যবহারের প্রতি আমাদের উদাসীনতা। যেকোনো ইংরেজি মাসের দিন-তারিখ আমরা ক্যালেন্ডার না দেখে বলে দিতে পারি খুব সহজে। কিন্তু বাংলা মাসের দিন-তারিখ আমরা বাংলা ক্যালেন্ডার না দেখে বলতে পারি না, যা হতাশাজনক। প্রয়োজন বাংলা ক্যালেন্ডার ব্যবহারের প্রতি যত্নবান হওয়া। নিজস্ব চিন্তাধারা, নিজস্ব সংস্কৃতিকে ভুলে না যাওয়া।
যদি শ্রেণীকক্ষে ব্ল্যাকবোর্ডে প্রতিদিন ইংরেজি তারিখের পাশাপাশি বাংলা মাসের দিন-তারিখ লেখা থাকে, তবে ছাত্রছাত্রীরা খুব সহজে তা মনে রাখতে পারবে। যদি দাপ্তরিক কাজ থেকে শুরু করে প্রতিটি কাজে কাগজে-কলমে ইংরেজি তারিখের পাশাপাশি বাংলা মাসের তারিখও ব্যবহার করা হয়, তবে বাংলা ক্যালেন্ডারের গুরুত্বটা বাড়বে।
সঞ্জয় কুমার ভৌমিক
সহকারী শিক্ষক, আলীশারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীমঙ্গল।
তিশিখালী মেলা
আমাদের গ্রামবাংলার লোকজ সংস্কৃতি ও সামাজিক উৎসবগুলোর মধ্যে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে মেলা। আজকের এই নগরজীবনের কর্মব্যস্ততার মধ্যেও মেলা শব্দটি যেন আমাদের হূদয়ে এক অন্য রকম আনন্দঘন মুহূর্ত উপস্থাপন করে। দেশের বৃহত্তম চলনবিল অঞ্চলের সিংড়া উপজেলার সবচেয়ে বড় আর ঐতিহ্যবাহী মেলা হলো তিশিখালী। প্রতিবছর চৈত্র-চন্দ্রিমার ৬ তারিখে সিংড়া উপজেলা সদর থেকে আট কিলোমিটার আগে পীর ঘাসী দেওয়ান মাজার ঘিরে এক দিনব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৮ এপ্রিল, ৫ বৈশাখ বৃহস্পতিবার। মেলাকে ঘিরে মেলাবাসীরা এখন খুবই ব্যস্ত। বাড়িঘর লেপা-মোছা, ঝুরি তৈরি, খই-মুড়ি ভাজা, জামাই-ঝি ও লোক কুটুম দাওয়াতসহ অত্র অঞ্চলে সাজ সাজ রবে চলছে মেলার প্রস্তুতি।
প্রায় সাড়ে ৩০০ বছরের পুরোনো লোকজ সংস্কৃতির এই মেলা উৎসবের বড় ঐতিহ্য হলো, মেলার পূর্বরাতে পীর ঘাসী দেওয়ান মাজারকে ঘিরে শুরু হয় জমজমাট গানের আসর।দূর-দূরান্তের আগত ভক্ত-আশেকানরা দল বেঁধে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে শুরু করেন গানের আসর। দেহতত্ত্ব গানে মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। এখানে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানদের কোনো ভেদাভেদ নেই। গানে গানে সবাই যেন এক কাতারে শামিল।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, শত বছরের ঐতিহ্য এই মেলা সংস্কৃতি এবং হাজার বছরের ঐতিহ্য পীর ঘাসী দেওয়ান মাজারের মালিকানা নিয়ে চলছে দীর্ঘদিনের জটিলতা। যে জটিলতায় একদিকে যেমন সরকার তার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি মালিকানার সূত্র ধরে প্রায় বছরই মেলার দিন শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।মাজারের কাছাকাছি সাতপুকুর ও হিজলি গ্রামবাসীর মধ্যে মাজার দখলের এই লড়াই আজ নতুন নয়, দীর্ঘদিনের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে জোরালো কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এবং অল্পসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকায় প্রতি বছর মেলায় আসা দর্শনার্থীরা আতঙ্কের মধ্যেই থাকেন।
উল্লেখ্য, এ বছরও মেলার দিন মাজার দখলকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের আশঙ্কা করছেন অনেকে। ঐতিহ্যবাহী এই মেলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ মাজারের ব্যক্তিমালিকানা উচ্ছেদ করে সরকারের অনুকূলে আনার জন্য স্থানীয় সাংসদ ও সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সৌরভ সোহরাব
আয়েশ, সিংড়া, নাটোর।
উচ্চতর গণিত
আমার ছেলে সাভারের বিপিএটিসি স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্র। এবার নবম শ্রেণীর সব বই নতুন সিলেবাসে প্রণয়ন করা হয়েছে। বোর্ড থেকে সব বই পেলেও এখন পর্যন্ত উচ্চতর গণিত বই পায়নি। বছরের চার মাসের মাঝামাঝিতেও বই না পাওয়ায় লেখাপড়ায় দারুণভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। বিপিএটিসি সাভারের স্বনামধন্য স্কুল হওয়া সত্ত্বেও এখান থেকে উচ্চতর গণিত বই পাওয়া যায়নি। অথচ সাভারের অনেক কিন্ডারগার্টেন স্কুলে এ বই সরবরাহ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মো. নুরুল ইসলাম, রেসকোর্স, কুমিল্লা।
১৮ এপ্রিল /২০১৩.